কর্মঘন্টা সমান, অর্ধেকের কম মজুরি

‘তোমরা কহেন তো, হামরাগুলা পুরুষের সাথে সমানতালে কাম করি পাই ২০০ টাকা আর পুরুষগুলা পায় ৫০০ টাকা। হামরা কি ওমারগুলার থাকি কম কাম করি? ওরাও আইসে বিহানে, হারাগুলাও আসি বিহানে। তাহলে ওরা এত পায় কেন? ভুট্টাখেতে কাজ করার সময় আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চকরঘু গ্রামের ললিতা রানী।

বীরগঞ্জে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করা অধিকাংশ নারীরই মজুরি নিয়ে ললিতার মতো এমন আক্ষেপ রয়েছে। উপজেলায় মাঠে কাজ করার ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকলেও তাঁরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না।
বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শত শত নারী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করছেন। পুরুষ শ্রমিকেরা যেখানে সারা দিন কাজ করে মজুরি পান ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে নারীরা পাচ্ছেন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে একাধিক নারীশ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরুষশ্রমিকের তুলনায় বেশি কাজ করেও তাঁরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

সেটা মেনে নিয়েই জীবিকার তাগিদে কাজ করে যেতে হচ্ছে তাঁদের। ঘরের কাজ সেরে বাইরে শ্রম দেওয়ায় শরিক হচ্ছেন তাঁরা। ভোগনগর ইউনিয়নের নন্দগাঁও গ্রাম বীণা রানী দাস বলেন, পুরুষেরা কৃষকের বাড়িতে একবেলা খেয়েও ৫০০ টাকার মতো মজুরি পান। অন্যদিকে নারীরা সমান কাজ করে ও নিজের বাড়িতে খেয়ে পান অর্ধেকের কম টাকা। এই আয় দিয়ে সন্তানদের নিয়ে সংসার চালানো খুব কঠিন। এখন বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে খরচ চালানো কঠিন হয়ে গেছে।

আরো পড়ুন :
>বিজয় দিবস উপলক্ষে ঝিকরগাছায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
>কত আসনে ইভিএমে ভোট সিদ্ধান্ত জানুয়ারির মধ্যে: ইসি আলমগীর
>নারায়নগঞ্জে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রাজউক

বীণা রানী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খালি কহে নারী-পুরুষ সমান অধিকার। তোমরাই কহেন তো আসলে কি নারী-পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছে? সরকার যদি হামারগুলার কাগজ-কলমে অধিকার না দিয়া বাস্তবে অধিকার বাড়াইল হয়, তাহলে হামারগুলার এত কষ্ট হইলোহ নাই। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিবেদিতা দাস বলেন, ‘আমরা নারীদের অধিকারের কথা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তুলে ধরি। আমরা সর্বস্তরের মানুষ যদি এক হয়ে কাজ করি তাহলে নারীদের বৈষম্য দূর করা সম্ভব বলে মনে করি।

ডিসেম্বর ২০.২০২২ at ১৬:১৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর