চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দুর্নীতির চাদরে মুড়িয়ে রেখেছে ডা. লুৎফুন্নাহার

যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: লুৎফুন্নাহার লাকি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যোগদানের পর থেকেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে নানাভাবে ভূয়া বিল-ভাউচার করে সীমাহীন অর্থ লোপাট করে চলেছেন। ঔষুধ সরবরাহের ঠিকাদারির কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ, কর্মচারীদের ভাতার টাকা আত্মসাৎ, কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের অর্থ আত্মসাৎ, আপ্যায়নের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, খাবার সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ, এবং ট্রেনিংয়ের টাকা আত্মসাৎ এছাড়াও কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার নিকট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাকি মেডিসিন সাপ্লাই বৈকালীর স্বত্বাধিকারী আ: রশিদ অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চৌগাছা, যশোরে গত ২০২১-২০২২ অর্থ বৎসরে (এমএসআর) ৪৬ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহের কাজ পাই। সরবরাহের পরে আমার চেক আনতে গেলে আমার নিকট ৫% অর্থাৎ ২ লাখ ৮০০০০ হাজার অবৈধ টাকার দাবী করে, আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করি তখন উনি আমার সাথে খারাপ আচরন করেন যেমন- আপনি টুপি মাথায় দিয়েছেন কেন? দাড়ি রেখেছেন কেন ? উনি একজন বিসিএস কর্মকর্তা ও মুসলমান অফিসার। একজন হিন্দু অফিসারও সাধারনত এভাবে কথা বলে না। আমি পরবর্তীতে উনার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিয়ে চেক নিয়ে আসি।

এখন আমি কার্যাদেশের বিপরীতে কার্য সম্পাদন জামানত ফেরৎ চেয়ে আবেদন পাঠিয়েছি আমার লোক দিয়ে। তিনি তার নিকটও অবৈধ টাকা চেয়েছে এবং বলেছে এক বৎসরের আগে কার্য সম্পাদন জামানত ফেরত দেওয়া যাবে না। এই সব ঔষধ পত্র ও মালামাল ১ (এক) বৎসরের ওয়ারেন্টির জিনিস নয়। ভারী: যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে জামানত জমা থাকবে।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

কিন্তু দরপত্র ক্রয়ের শর্তাবলীর ১৩ নম্বরে বলা হয়েছে নির্ধারিত অর্থবছরে কার্যাদেশ অনুযায়ী মালামাল সন্তোষজনকভাবে সরবরাহের পরপর কার্য সম্পাদনের জামানতের টাকা আবেদন সাপেক্ষে ফেরত দেওয়া হবে ( উক্ত সময়ের মধ্যে জামানতের টাকা ফেরত লইবার পূর্বে কর্তৃপক্ষ এম এস আর সামগ্রীর যেকোনো আইটেমের মালামাল পরিবর্তন/ পরিবর্ধন করিতে পারিবেন। তবে উনি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে যে টেন্ডার প্রক্রিয়া করেছেন তা পি পি এ ২০০৬ ও পি পি আর ২০০৮ না মেনে সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ায় করেছেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চৌগাছা হাসপাতালে ঔষধপত্র (ইউসিএল বর্হিভূত), মালামাল সরবারাহের কার্যাদেশ পান মজুমদার ট্রেড কর্পোরেশন। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: লুৎফুন্নাহার ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে ৭ টি বিল ভাউচারে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ২’শ টাকার বিল-ভাউচার জমা দেন হিসাবরক্ষণ অফিসে। একই সাথে বিলের সমস্ত টাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেখে ব্যক্তিগত একাউন্টে প্রদানের জন্য সুপারিশ করেন।

বিলগুলো জমাদানের পর হিসাবরক্ষণ অফিসার ইউনুচ আলীর নজরে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি সকল বিল ভাউচার প্রাথমিক যাচাই করে নিশ্চিত হন যে, বিল দাখিলের মধ্যে ব্যাপক ত্রুটি রয়েছে। একই সাথে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাদে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নামে বিল ছাড় করা নিয়ম বর্হিভূত। এই অবস্থায় জমাকৃত বিল-ভাউচার ত্রুটিযুক্ত সন্দেহ হবার কারনে তিনি বিলগুলো ছাড় করা থেকে বিরত থাকেন। একই সাথে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার ইউনুস আলী।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

কোভিড-১৯ এর টিকাদান কর্মসূচির ১১টি ইউনিয়ন টিকা দানের কর্মসূচিতে সরকার থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দের সম্মানি টাকা, প্রত্যেক কর্মসূচিতে লোকবল ছিল প্রতিকেন্দ্রে ২ জন করে টিকাদান কর্মী এবং ১০১টি ওয়ার্ডে ৩জন করে স্বেচ্ছাসেবী যার অনুকূলে বরাদ্দ লাখ লাখ টাকা টিকাদান কর্মীদের না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বিরতিহীনভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে করোনার টিকা দিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়ে সকল ইউনিয়নে ও ওয়ার্ডভিত্তিক সকল টিকা দিবসে টিকা প্রদান করেছেন। এছাড়া রুটিন করে উপজেলা স্থায়ী কেন্দ্রে শুরু থেকে এই স্বাস্থ্যকর্মীরাই টিকা দিচ্ছেন।

হাসপাতালের সূত্র মতে, সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা তাসলিমা খাতুন, কোহিনুর আক্তার, লুৎফুন্নেসা ও একাধিক সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কর্মীরা জানান, হাসপাতালের ২০ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ২৭ জন সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, টিকাদানকর্মীরা ও স্বেচ্ছাসেবীরা ২০২১ সালের ৭ আগষ্ট থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২৬ দিন কাজ করেন। কিন্তু ২০২১ সালে ৭ আগষ্ট থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকাদানের কাজ করলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ২৬ দিনের কোনো টাকা দেওয়া হয় নি বরং সকল সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক (এএইচআই) ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা টিকাদান কর্মীদের তার রুমে ডেকে নিয়ে ৮০০০ টাকার ও ২০০০ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্পের বিলে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন। সবগুলো বিলের কাগজপত্র (ইউএইচএফপিও) কাছে আছে। কোনো বিলই এখন পর্যন্ত কাউকে দেননি। কোনো টাকা কাউকে দেয় নি।

ডা.লুৎফুন্নাহারের দুর্নীতির কথা লিখে শেষ করা যাবে না। এছাড়া ও AHI,CHCP,MHV,FWA টিকাদানকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, চলতি বছরের প্রতিদিন প্রতিটি টিকাদানকর্মীদের সম্মানী ভাতা ৫০০ টাকার স্থলে ৩৯০ টাকা করে দেন। যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টিকাদানকর্মীদের সম্মানী ভাতা বাবদ ৫০০ টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও সিভিল সার্জনকে দিতে হবে বলে ১১০ টাকা করে কেটে রাখেন (ইউএইচএফপিও)।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

সম্মানী ভাতা থেকে কোন প্রকার টাকা কেটে রাখার নিয়ম না থাকলেও কেটে রাখার এমন কর্মকাণ্ডে টিকাদান কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিসের টাকা কাটছেন এমন প্রশ্নের জবাবে টিকাদান কর্মীদের সাথে (ইউএইচএফপিও) দুর্ব্যবহার করেন। এছাড়া টিকাদানকর্মীরা জানান, প্রত্যেকটি টিকা দিবসে আপ্যায়নের জন্য নাস্তার বরাদ্দ থাকলেও টিকাদান কর্মীদের নাস্তা না দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,২০২১-২০২২ অর্থবছরের হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিল বেনামে উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের হাসপাতালের অভ্যন্তরে সাব-সেন্টারের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিল বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়,২০২১-২০২২ অর্থবছরের হাসপাতালের অভ্যন্তরে পাশাপোল,জগদীশপুর,‌নারায়নপুর,সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের ৪টি সাব-সেন্টারের ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ এ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৯৯ হাজার ৮৪০ টাকা (যার রেজিঃ নং ৯৯০৪)। জুন মাসের ২৬ তারিখে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৪৯ হাজার ৯২০ টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৮৫৪৫)।

তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪ টি সাব- সেন্টারের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কৃষ্ণ অধিকারী,আল আমিন, মহিবুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন বলেন,২০২১ সালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ কোনো টাকা আমাদের প্রদান করা হয় নি। কোনো টাকাও উত্তোলন করিনি। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখে হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা( যার রেজিঃ নং ২৩৯৯৪)। একই মাসে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১লক্ষ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৩৪৪৩)। ২০২২ সালের জুন মাসের ২৬ তারিখে হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১ লক্ষ ৬২০০০ হাজার টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৮৩৮৬)।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

২০২২ সালের জুন মাসের ২৮ তারিখে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পিট নির্মাণে আপ্যায়ন বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৭৫০টাকা( যার রেজিঃ নং ২৮৫৮২),একই তারিখে পিট নির্মাণে ৩টি সাউন্ড সিস্টেমের জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ৩০০০ হাজার টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৮৫৮১),৩টি ফটোকপি বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩০০০ হাজার টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৮৫৮৩), ৩টি সভার ব্যানার তৈরি করতে খরচ দেখানো হয়েছে ৪০০০ হাজার টাকা ( যার রেজিঃ নং ২৮৫৮৪), জুন মাসের একই তারিখে ৩ বারে পিট নির্মাণে সম্মানী বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৫০ টাকা ( যার পর্যায় ক্রমে রেজিঃ নং ২৮৫৮৫,২৮৫৮৬,২৮৬৮৭)। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা,পিট নির্মাণে, ফটোকপি,ব্যানার তৈরি বাস্তবে এ সমস্ত কোনো কাজের হদিস মেলেনি। ভূয়া বিল ভাউচার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ( ইউএইচএফপিও)।

২০২২ সালের জুন মাসের ২৫ তারিখে হাসপাতালের অভ্যন্তরে ৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ৬,৪৬,৩৮০ টাকা (যার রেজিঃ নং ২৮০৭৫), একই মাসে ২৭ তারিখে খরচ দেখানো হয়েছে ৫১ হাজার ৬০০ টাকা (যার রেজিঃ নং ২৮৫৬০)। এছাড়া ২০২২ সালের হাসপাতালের অভ্যন্তরে ৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা প্রতিনিধিকে বলেন, চলতি বছরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য কোনো বরাদ্দ আমাদের দেওয়া হয় নি। কোনো বিলও আমরা জমা দেয়নি। কোনো টাকাও উত্তোলন করিনি। এছাড়া ২০২২ সালের জুন মাসের ২৮ তারিখে কোভিড ১৯ টিকাদান কর্মসূচিতে প্রতি ইউনিয়নে মাইকে প্রচার বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩৩০০০ হাজার টাকা (যার রেজিঃ নং ২৮৬৪৬)।

তবে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে টিকা দেওয়ার জন্য মাইকে প্রচার করার কথা থাকলেও স্থানীয়রা বলেন টিকা দেওয়ার কথা এলাকার মসজিদের মাইকে বলেছে ফলে মাইকে প্রচারের হাজার হাজার টাকাও আত্মসাৎ করে (ইউএইচএফপিও)। এছাড়াও ২০২২ সালের জুন মাসের ৩০ তারিখে কোভিড ১৯ টিকাদান কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকগনের সম্মানী বাবদ ৮ লাখ ৮২০০০ টাকা(যার রেজিঃ নং২৮৬৪৭) ভাউচার ব্যতিরেকে নিজে বিল প্রস্তুতপূর্বক উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অথচ এই অর্থ হাসপাতালের কোন স্টাফদের মাঝে প্রদান করা হয়নি বলে জানান অফিসের কর্মচারীরা।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ ২০২১-২২ সহ বিভিন্ন জাতীয় ও গুরুত্বপুর্ণ দিবস সঠিকভাবে পালন করেন না। অধিকাংশ জাতীয় প্রোগ্রামগুলো তিনি অফিসের সকল স্টাফদের নিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে দায় সারা হিসেবে শেষ করেন। এক্ষেত্রে সরকারি বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার হয় না এবং সরকারী মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সরকারের একটি নির্দিষ্ট সময় দিয়ে সারা বাংলাদেশে তা একযোগে পালন করার নির্দেশ থাকলেও নামমাত্র রেজুলেশন করে পুষ্টি সপ্তাহের অর্থ উত্তোলন করে সাত দিনের কার্যক্রম একদিনে শেষ করণ। হাসপাতালের অন্তবিভাগে সাধারণ রোগীরা তালিকা অনুযায়ী খাবার পান না। খাবারে উন্নত মানের মাছ ও খাশির গোশতের পরিবর্তে নিম্ন মানের মাছ ও ব্রয়লার মুরগী দেয়া হয়।

সূত্র মতে,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা বলেন, শ্রান্তি বিনোদনের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারের বরাদ্দকৃত ভাতার অর্থ থেকেও সিভিল সার্জনকে দিতে হবে বলে ৩% কেটে নিয়েছেন । সরকারি কোনো নিয়ম না থাকলেও সিভিল সার্জনকে দিতে হবে বলে টাকা কেটে রেখেছেন (ইউএইচএফপিও)।২০২২ সালের আগস্ট মাসের ১৭ তারিখে সহকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের হাম নিরীক্ষণ ট্রেনিং বাবদ ৬০০ টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও ৩০০ টাকার বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন । কিন্তু ৩০০ টাকার বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করে নিলেও কোনো টাকা দেয়নি সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের (ইউএইচএফপিও)।

এছাড়া প্রত্যেকটি ট্রেনিংয়ে ৬০০ টাকা করে একটি ব্যাগ দেয়ার কথা থাকলেও কোন ট্রেনিংয়ে ব্যাগ দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন। এছাড়াও সব প্রকার বিল, ভাউচারে তাকে কমিশন না দিলে তিনি বিলে, স্বাক্ষর বা সই করেন না। এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন,ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাকি মেডিসিন সাপ্লাই এর স্বত্বাধিকারী আ: রশিদ আমার নিকট অভিযোগ করেছিলেন। উনি তো উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমি বিষয়টি তদন্ত করতে পারিনা এইজন্য আমি অভিযোগটি ফরওয়ার্ডিং করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট পাঠিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসক মহোদয় সিভিল সার্জনের নিকট পাঠিয়েছে বলে জানান। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি এ সকল বিষয়ে বলেন, আমি কাগজ পত্র না দেখে এখনি কিছু বলতে পারবো না।

আরো পড়ুন :
বীরগঞ্জে অসহায়দের ভ্যান, গরু ও ছাগল বিতরণ
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত ভাসমান লাশ উদ্ধার

আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। আমি হাসপাতালটিতে অনেক নতুন কিছু সংযোজন করেছি। যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, চৌগাছা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুন্নাহার লাকির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে এখনো লিখিতভাবে কিছু পাইনি। অভিযোগ পাইলে তদন্ত করে দেখে সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিসেম্বর ১৮.২০২২ at ১৬:১৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর