প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে নেতাকর্মীদের ঢল

পাঁচ বছর সাত মাস পর সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ইনানী-পাটোয়ারটেক সৈকতে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন মহড়ার উদ্বোধন করবেন তিনি।

পরে দুপুর আড়াইটায় সৈকতের লাবনী পয়েন্টের কাছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। তবে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি উপজেলা থেকেও মিছিল নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা। তাদের স্লোগানে-স্লোগানে মুখর রাজপথ।

এর আগে এক দিন আগেই মঙ্গলবার দুপুর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শুনতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কক্সবাজার শহরে জড়ো হতে শুরু করেছেন। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসতে দেখা গেছে। তাদের মিছিল আর স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো কক্সবাজার শহর।

এদিকে, সর্বসাধারণের জন্য জনসভাস্থল বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার পর খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে সকাল থেকেই লাবণী পয়েন্ট শেখ কামাল স্টেডিয়ামের মাঠে প্রবেশের মূল গেটে হাজার হাজার নেতাকর্মীর জটলা দেখা গেছে। একেক নেতার অনুসারীরা নিজেদের পরিচয় জানান দিতে পরিধান করেছেন নানা রঙের টি-শার্ট, গেঞ্জি, টুপি। স্লোগান, বাদ্যযন্ত্রে জনসভাস্থলে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবের আমেজ।

আরো পড়ুন:
ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ কিছু টিপস
বিশ্বকাপ ট্রফি উন্মোচন করবেন দীপিকা!
যশোর বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কল্যাণে নতুন গ্রেড শিট

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারে চলমান কর্মযজ্ঞের মাঝে সম্পন্ন হওয়া ২৮টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। এছাড়া চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, এক হাজার ৩৮২ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সমাপ্তের পর উদ্বোধনের তালিকায় থাকা উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রামুতে বিকেএসপি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কক্সবাজারে ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম উন্নয়ন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কুতুবদিয়ায় ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ও বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠ এবং কলাতলী উদ্যান নির্মাণ। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের আওতায় জোয়ারিনালা শেখ হাসিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, আব্দুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় ভবন ও উখিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ৩ তলাবিশিষ্ট আধুনিক বহির্বিভাগ ভবন নির্মাণ। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায় জেলার লিংক রোড-লাবণী মোড় সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ; টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ অংশ পুনর্নির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ; রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথমান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কক্সবাজার টেকনাফস্থ শাহপরীর দ্বীপে পোল্ডার নং-৬৮ এর সি-ডাইক অংশের বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ণ। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন রামু উপজেলাধীন কলঘর বাজার-রাজারকুল ইউপি সড়কে বাকঁখালী নদীর ওপর ৩৯৯ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ব্রিজ; নবনির্মিত ৬ ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন; রামু উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ; টেকনাফ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন সম্প্রসারণ; উখিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ; বিমানবন্দর হতে নুনিয়ারছড়া সড়ক এবং ৪টি সংযোগ সড়ক আরসিসিকরণ; শহীদ সরণী সড়ক এবং ৩টি সংযোগ সড়ক আরসিসিকরণ; সদর থানা হতে খুররুকুল পর্যন্ত আরসিসি সড়ক নির্মাণ; সুগন্ধা পয়েন্ট হতে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক এবং ৪টি সংযোগ সড়ক আরসিসিকরণ এবং কক্সবাজার প্রধান সড়ক হতে খরুশকুল রোড হয়ে তারাবনিয়ারছড়া পর্যন্ত আরসিসি সড়ক নির্মাণ প্রকল্প শেষ হয়েছে।

আরো পড়ুন:
ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ কিছু টিপস
বিশ্বকাপ ট্রফি উন্মোচন করবেন দীপিকা!
যশোর বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কল্যাণে নতুন গ্রেড শিট

পাশাপাশি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এলজিইডির আওতায় কুতুবদিয়ার ধুরুং জিসি মিরাখালী সড়কের ধুরুংঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি ও আকবর বলি ঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি ও মহেশখালী গোরকঘাটা ঘাটে জেটি নির্মাণ এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নতির লক্ষ্যে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদীর তীরের ৬৭/এ, ৬৭, ৬৭/বি এবং ৬৮ পোল্ডার পুর্নমেরামত প্রকল্প।

এর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে কক্সবাজারে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জেলাকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসাবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এর ঠিক সাড়ে ৩ মাস পর আগস্টের শেষ দিকে কক্সবাজারে ঢল নামে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের বিপুল উন্নয়নের পরও জেলার মানুষের স্বস্তি নেই। বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি। স্থানীয়দের আশঙ্কা, নিজগৃহে আবার পরবাসী না হয়ে যান তারা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের অশান্ত পরিস্থিতি নতুন করে আতঙ্কিত করে তুলেছে তাদের; যার স্থায়ী সমাধান চান এই জেলার মানুষ।

সূত্র- ভোরের কাগজ

ডিসেম্বর ০৭.২০২২ at ১১:২৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/ এসআর