জাবির সহকারী প্রক্টর জনির অপসারণ দাবি

‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জসিমউদ্দিন মানিকের দ্বিতীয় উত্থান ঘটেছে বর্তমান সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির একাধিক অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে। একজন শিক্ষক নৈতিকতা শেখাবে সেখানে জনি শিক্ষার্থীদের অনৈতিকতায় ধাবিত করেছে। একইসাথে চাকরির প্রলোভনে একাধিক ছাত্রীকে নিপীড়ন করেছে।’ জনির অপসারণ দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি।

তিনি আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের জন্য এটা লজ্জার বিষয়। জনির এই ঘটনাকে অনেক প্রভাবশালী শিক্ষক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্ত, সত্যি কখনো চাপা থাকে না। জনি যে অনৈতিক কাজ করেছে এটা সবার কাছেই স্পষ্ট। দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে জনিকে অপসারণ করা হোক। কোনো অনৈতিক ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসেবে চাই না। আমরা জাহাঙ্গীরনগরে আর কোনো মানিকের উত্থান চাই না।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি সম্পন্ন হয়। এসময় ‘নিপীড়ক প্রশাসক নিপাত যাক, নিপীড়কের আস্তানা জাহাঙ্গীরনগরে হবেনা, চরিত্রহীন জনিকে ক্যাম্পাস থেকে অপসারণ কর, নষ্ট প্রশাসক নিপাত যাক, শিক্ষা সন্ত্রাস এক সাথে চলে না, ভ্রূণ হত্যাকারী জনিকে বহিষ্কার কর’ প্ল্যাকার্ডে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।

এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অবিলম্বে মাহমুদুর রহমান জনির অপসারণ, তদন্ত কমিটি গঠন ও শিক্ষকতা থেকে বরখাস্তের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রীদের প্রলুব্ধ করে জনি অনৈতিক সম্পর্ক ও যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি অনুসারে ২ এর ঘ, ৩ এর জ এবং ৪ এর ঘ মোতাবেক ‘নৈতিক অসচ্চরিতা ও অসদাচরণ সংগঠিত হয়েছে। এধরণের নিপীড়নের ঘটনা ৯০ দশকের জসিম উদ্দীন মানিকের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই ঘৃণ্য অপকর্ম সম্ভব না। যার কারণেই হাতে এতোসব প্রমাণ স্বত্ত্বেও জনিকে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে না।

আরো পড়ুন:
ঘোড়াঘাটে আনসার ভিডিপি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
হরিনাকুন্ডুর চাঞ্চল্যকর জনি হত্যা মামলায় প্রধান আসামী গ্রেফতার
আজ ৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস

সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতম বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান জনি ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন অপকর্ম শুরু করেন। সেই ধারা অব্যাহত রেখেই তিনি প্রথমে শিক্ষক এবং পরে সহকারী প্রক্টর হয়। আমরা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে জনির শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।’ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আবু সাইদ বলেন, ‘জনি ক্ষমতার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন।

শিক্ষক হওয়ার পরে তার নানা ধরনের অপকর্ম আলোচিত হয়েছে। এতে স্পষ্ট নৈতিক চরিত্রের স্খলন ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে জনি নোংরামির সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আর কোনো জসিমউদ্দিন মানিক দেখতে চাই না। জনিকে প্রশাসনিক সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনা হোক।’কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা।

ডিসেম্বর ০৬.২০২২ at ১৬:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/ এসআর