ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের চৌকিদার এখন ড্রাইভার!

ছবি: এজিএম নাহিদ উল হক

এজিএম নাহিদ উল হক চাকরী করেন পিয়ন কাম চৌকিদার পদে। তার দায়িত্ব রাতে ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধান করা। নিয়মিত তিনি বেতনও তোলেন ঝিনাইদহ থেকে। কিন্তু পাঁচ বছর তিনি উধাও! কোথায় আছেন, কি করেন তা অজানা ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তাদের। তবে অনুসন্ধানে এজিএম নাহিদ উল হকের খোঁজ মিলেছে খুলনা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালকের দপ্তরে। পাঁচ বছর ধরে তিনি বিভাগীয় পরিচালক মো. হাবিবুল হক খানের কোটি টাকা মুল্যের সরকারী গাড়ি চালাচ্ছেন।

আরো পড়ুন:
>আগামী ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা দিবস সফলের লক্ষে ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ে প্রস্ততি সভা
>ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে শীতজনিত রোগে দুই দিনে ২৫ শিশুর মৃত্যু

পিয়ন কাম চৌকিদার পদে চাকরী করে তিনি সরকারী গাড়ি কি ভাবে চালাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে লোকবলের অভাবে ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। মহেশপুর থেকে ডেপুটেশনে লোক এনে কাজ চালানো হচ্ছে। অথচ চৌদিকার এজিএম নাহিদ উল হক বিভাগীয় পরিচালকের ফুটফরমায়েশ খাটছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এজিএম নাহিদ উল হক সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের হাজিরা খাতায় সাক্ষর করেছেন। এরপর হাজিরা খাতায় কুষ্টিয়ায় বদলীর কথাটি উল্লেখ থাকলেও তিনি কুষ্টিয়ায় নেই।

অনুসন্ধানে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। এজিএম নাহিদ উল হকের স্ত্রী কুষ্টিয়ায় পড়ালেখা করার সুবাদে তিনি ডেপুটেশন নিয়ে কুষ্টিয়া অফিসে চলে যান। সেখানে কয়েক মাস চাকরী করার পর খুলনার বিভাগীয় পরিচালক হাবিবুল হক খানের সরকারী গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে গাড়ির ড্রাইভার খুলনা থেকে ঢাকায় বদলী হন। এদিকে বিভাগীয় পরিচালক পিয়ন কাম চৌকিদার নাহিদকে বিধি ভঙ্গ করে কুষ্টিয়া থেকে আবার ডেপুটেশনে খুলনা অফিসে নিয়ে গাড়ির ড্রাইভার সাজিয়ে রেখেছেন।

ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ তাঞ্জুয়ারা তাসলিম জানিয়েছেন, নাহিদ উল হক এখন ঝিনাইদহে নেই। তিনি এখান থেকে বেতন তোলেন। তিনি বলেন ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি ২৪ ঘন্টা খোলা। ফলে তিন শিফটে তিনজন ডিউটি করার কথা। দুইজন ডিউটি করেন। এক শিফট লোকের অভাবে ফাঁকা রাখতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন মা ও শিশুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে অন্যদিকে লোকের অভাবে কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পরিবার পরকিল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোজাম্মেল করিম জানান, তিনি সবে মাত্র দায়িত্ব নিয়েছেন। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের খুলনার বিভাগীয় পরিচালক হাবিবুল হক খান জানান, নাহিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে কুষ্টিয়ার ডেপুটেশন বাতিল করে বিধি সম্মত ভাবেই খুলনায় বদলী করা হয়েছে। সে এখানে পিয়নের কাজের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে গাড়িও

চালায়। পিয়ন কাম চৌকিদার এজিএম নাহিদ উল হক জানান, কুষ্টিয়া থেকে তিনি চার মাস হলো খুলানায় ডেপুটেশনে বদলী হয়েছেন। খুলনা অফিসে লোকবল নেই বিধায় তিনি আবেদন করায় কর্তৃপক্ষ তাকে খুলনা অফিসে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ডেপুটেশনের জন্য আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো মনে করেছেন বলে নিয়ে এসেছেন।

ডিসেম্বর ০৩, ২০২২ at ১৯:১৯:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস