যশোরে ঐতিহ্যবাহী ৩২ দলীয় হাডুডু প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ৩২ দলের হাডুডু টুনামেন্ট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে যশোরের চান্দুটিয়া স্কুল মাঠে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এ টুনার্মেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুক্রবার দিনব্যাপী এ টুনামেন্ট দেখতে হাজির হয় হাজার হাজার দর্শক। স্থানীয় যুব সমাজের উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মটবাড়িয়া দল। আর রানার্সআপ হয় নাভারণ দল।

খেলাধুলা মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামবাংলার প্রাচীন খেলা হাডুডু একটি নির্মল আনন্দদায়ক খেলা। হাডুডু বা কাবাডি গ্রামবাংলার অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। বর্তমানে এ খেলা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। তবে ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি এখন গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। খেলাটি সাধারণত কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা খেলে থাকে। সাধারণত বিশেষ উৎসব বা পালা-পার্বণে বেশ আড়ম্বরপূর্ণভাবে আয়োজন করা হয়।

গ্রামীণ ঐতিহ্যের এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হাডুডু এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। গ্রামের কাচা রাস্তায়, মাঠ, বাগানে বা খোলা স্থানে জমজমাট ও উৎসবমুখর পরিবেশে হতো এ হাডুডু খেলা। নতুন প্রজন্ম জানে না এ খেলা সম্পর্কে। ভুলতে বসছেন অন্যরাও। তাই নতুন করে খেলোয়াড়ও তৈরি হচ্ছে না। শুক্রবার হাডুডু খেলাটি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। খেলা দেখতে আসা সোহেল রানা বলেন, হাডুডু খেলাটি গ্রামের অনেক জনপ্রিয় খেলা। গ্রামে এ খেলার আয়োজন হতেও দেখা যায়। বহু বছর পর খেলা দেখে খুব ভালোই লাগছে।

মনে হচ্ছিল সেই পুরনো দিনে ফিরে এসেছে। নানা কারণে এ খেলাটি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এটিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। খেলা দেখতে আসা প্রবীণ দর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, দীর্ঘদিন পর হাডুডু খেলা দেখতে পেলাম। খুব ভালো লেগেছে। আগে প্রায়ই এ খেলার আয়োজন হতো। বর্তমান প্রজন্ম এ খেলা কোনো দিন দেখেনি। খেলাটির আয়োজন করায় তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

আরো পড়ুন:
নেইমারের ইনজুরি নিয়ে নতুন শঙ্কা, রাতে মাঠে নামছে ব্রাজিল
ইয়াস’র আয়োজনে শিশুদের মাঝে পিঠা উৎসব
পাইকগাছায় নিসচা’র আনন্দ সমাবেশ ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত

হাডুডু খেলা দেখতে আশা দর্শনার্থীরা বলেন, যে কোনো মূল্যে দেশের জাতীয় খেলা হাডুডুকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। যুব সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত রাখতে ক্রীড়া চর্চায় মনোযোগী ও আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি গ্রামের মানুষে মানুষে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বাড়াতে প্রতি বছরই এ খেলার আয়োজন করা উচিত।আয়োজক কমিটির সদস্য দাউদ হোসেন বলেন, হাডুডু আমাদের দেশের জাতীয় খেলা হলেও কালের বিবর্তনে অনুশীলন হয় না আর। এ খেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে আগামীতে হাডুডুসহ দেশীয় খেলার আয়োজন করা হবে।

দর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আনন্দ সহকারে সকলে মিলে খেলা উপভোগ করেছি। খেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি সিপন আহমেদ বলেন, এলাকাবাসীকে আনন্দ দিতে ও খেলাটিকে ধরে রাখার জন্য এই হাডুডু টুর্নামেন্টের আয়োজন করার উদ্দ্যেশ্য।খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন একটি ১০০ সিসি মোটর সাইকের রানার্সআপ দরকে একটি ফ্রিজ তৃতীয় স্থান ধারীকে দেওয়া হয় একটি ফ্রিজ ও চতুর্থস্থান ধারীকে দেওয়া হয় একটি বাইসাইিকেল।

ডিসেম্বর ০২.২০২২ at ২০:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর