সাভারে গর্ভেই নবজাতকের মৃত্যু! হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ

ঢাকার সাভারে একটি প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে গর্ভেই মারা যায় নবজাতক। বিষয়টি গোপন রেখে সিজার করে সেই নবজাতককে ভূমিষ্ঠ করার পর জানা যায় জম্মের চার ঘন্টা আগেই গর্ভে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে , গত রোববার রাতে উপজেলার তেতুঁলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুরের স্টান্ডার্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে।

ভুক্তভোগীরা জানান, তীব্র প্রসব ব্যাথা নিয়ে হেমায়েতপুরের ভরআলী এলাকার ভাড়া বাসায় থাকা দিনমজুর ফয়সাল (৩০) তার স্ত্রী শাকিলা আক্তার (২৬) কে ঐরাত প্রায় সাতটার দিকে ভর্তি করেন স্টান্ডার্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। সেখানে তার স্ত্রীর সিজার করে বাচ্চা প্রসব করার কথা থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ডাক্তার না থাকায় কালক্ষেপণ করতে থাকে। এরই মধ্যে আরো অসুস্থ হয়ে পরেন ফয়সালের স্ত্রী। এ সময় হাসপাতালের নার্স সুমাইয়া গর্ভবতী নারীকে প্রসব ব্যাথা নাশক ইনজেকশান দেন। পরদিন (সোমবার) সকালে অনকলে হাসপাতালে আসেন গাইনি ডাক্তার ফারজানা সারওয়ার।

তিনি এসে শাকিলাকে সিজার করে একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ করেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কৌশলে নবজাতকের চিকিৎসা করাতে হবে জানিয়ে শাকিলা ও তার মৃত সন্তানকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। এনাম মেডিকেলের কর্তব্যরত ডাক্তাররা রোগীর স্বজনদের জানান যে ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রায় চার ঘন্টা আগে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

আরো পড়ুন :
রাঙ্গুনিয়ায় শতভাগ পাসের তালিকায় হোসনাবাদ লালানগর ও আবুল বশর চৌধুরী স্কুল
ঘোঢ়াঘাটে কিশোর চয়নের আত্মহত্যা
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে প্রধান শিক্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

শাকিলা আক্তারের স্বামী ফয়সাল অভিযোগ করেন, রাত ৭টার দিকে আমার স্ত্রীকে স্টান্ডার্ড হাসপাতালে ভর্তি করি। তখন তার প্রচন্ড প্রসব ব্যাথা ছিল। ডাক্তার আসেনা বিধায় নার্স সুমাইয়া আমার স্ত্রীকে প্রসব ব্যাথা কমানোর ইনজেকশান দেয়। এভাবে সারা রাত কেটে যায়। পরদিন সকালে ডাক্তার এসে আমার স্ত্রীকে সিজার করে মৃত সন্তান বের করে। এ তথ্যটি গোপন করে বাচ্চার চিকিৎসা করাতে হবে জানিয়ে তারা আমাকে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

স্বজনদের অভিযোগ, সময়মত প্রসব করানো গেলে গর্ভের সন্তান আজ বেঁচে থাকতো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে একজন নবজাতক মায়ের পেট থেকে মৃত জন্ম নিলো। আমাদের রোগী যখন ভর্তি করা হয়েছিল তখন যদি সিজার করতো তখন হয়ত আমাদের সন্তান আমরা জীবিত পেতাম। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

স্ট্যান্ডার্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার ইত্তেহাদুল ইসলাম ইমরান রোগীর প্রতি অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি হাসপাতালে ছিলাম না পরে বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সায়েমুল হুদা বলেন,অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও ওই প্রাইভেট হাসপাতালটির অনুমোদন আছে কিনা এবং দায়িত্বরত নার্সরা প্রশিক্ষিত কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে।

নভেম্বর ২৯.২০২১ at ১৬:০৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর