জ্বালানির ভরসা কাঁশবনের পরিত্যক্ত খড়কুটো

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা দ্বিপচরগুলোতে কাঁশফুলের খড় কুড়িয়ে জ্বালানির চাহিদা মেটাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের প্রান্তিক ও নিম্নবিত্ত শ্রেনির বাসিন্দারা। এর মধ্যে রয়েছে জেলে গোষ্টির মানুষও। প্রতিদিন ভোরবেলা খেয়ে দুপুরের খাবার ও পানির বোতল সাথে নিয়ে কোমর সমান পানি ডিঙ্গিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার বালুচরের পথ পায়ে হেটে গন্তব্যে যান তারা।

আরো পড়ুন:
পাইকগাছায় মতুয়া সম্মেলনে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ইন্দ্রজিৎ

চরাঞ্চলের এমন খড় কুড়িয়ে নদী তীরবর্তি প্রায় শতাধিক মানুষ জ্বালানির চাহিদা পূরণ করছেন। এইসব খড়কুট কুড়িয়ে আগামী কয়েকমাস তারা জ্বালানির চাহিদা মেটাবেন। ব্রহ্মপুত্র পাড়ের জেলে পাড়া গ্রামের নুরভানু বেগম (৩৫) বলেন, ভোরবেলা ভাত খেয়ে সাথে দুপুরের খাবার ও পানির বোতল নিয়ে ভোরেই চরে গিয়ে এসব খড় কুড়িয়ে সামনের কয়েকমাস ব্যবহার করতে পারবো। আমরা সাধারণত দুই-তিন মাস সময় পাই এসব খড় কুড়ানোর। আমরা তো বন্যার সময় জ্বালানির খুর সমম্যায় পড়তে হয়। এখন এসব খড়কুটো কুড়িয়ে রাখলে বন্যা সহ আগামী কয়েকমাস ভালোই চলবে। ওই এলাকার ফাতেমা বেগম (৩৯) বলেন, আমার স্বামীর তো কাজ কাম নাই। নদীতে তেমন মাছ পাওয়া জায়না।

সারা বছর অভাবে মধ্যে যায়। সেই জন্যে আমরা এই দুই মাস কাশফুলের খড় কুড়োনোর সুযোগ পাই। এর পর কিছু খড়ি বিক্রি করতে পারি। আবার বাকিটা জ্বালানির জন্য রেখে দিতে পারি। খড় বিক্রির টাকা দিয়ে সংসার কোনো রকমে চলে। জেলেদের প্রধান ভোন্দল দাশ বলেন, আমাদের জেলে পাড়া সহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ সকালে গিয়ে সারাদিন এসব খড়কুটো কুড়িয়ে আনে। বিশেষ করে মহিলারা এইকাজ বেশি করে করে।

আমরা তো প্রায় সারাদিন নদীতে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত থাকি। মাঝে মধ্যে সহায়তা পাই আসলে তা দিয়ে তো সারাবছর চলা কষ্ট সাধ্য। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, আমরা এইসব নিম্নবিত্ত ও প্রান্তিক বিশেষ করে জেলে পরিবারের মানুষের মাঝে যতটুকু সম্ভব সহযোগীতা করে যাচ্ছি।

নভেম্বর ২৬, ২০২২ at ২০:১৩:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস