বেনাপোলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বই বিক্রির অভিযোগ

যশোরের বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল গোডাউনে রাখা লক্ষাধিক টাকার সরকারি বই রাতের আধারে বিক্রি করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সেখ সিরাজুল ইসলাম। এ রকম ঘটনা এর আগেও ঘটিয়েছেন তিনি। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারীসহ অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর বিদ্যালয় ছুটির কিছুক্ষণ পরে স্কুলে ফিরে আসেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় তার সঙ্গে স্কুলের দুই অস্থায়ী শিক্ষক এবং দুইজন কর্মচারী ছিলেন। পরে একটি বড় পিকআপসহ আরও কিছু লোক স্কুলে প্রবেশ করেন।

প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে কর্মচারীগণ বিদ্যালয় আঙিনার সকল বিদ্যুৎ লাইট অফ করে দিয়ে গোডাউনে ঢুকে সেখানে রাখা সকল বই পিকআপে তুলে দেয়। যার আনুমানিক মূল্য লক্ষাধিক টাকা। বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও বুধবার (২৩ নভেম্বর) স্কুলের জনৈক শিক্ষক ওই গোডাউনের চাবি চাইলে প্রধান শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন।

আরো পড়ুন:
আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট গতিশীল ও নিরাপদ আছে: প্রধানমন্ত্রী

এক পর্যায়ে উক্ত শিক্ষককে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করাসহ মারতে উদ্যোত হন তিনি। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা গোডাউন খুলে দেখেন সেখানে কোন বই নেই। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই গোডাউনে ২০২২ সালের নতুন বই, সংযুক্ত ভোকেশনাল শাখার অনেক বই সংরক্ষিত ছিল। গত বছরও প্রধান শিক্ষক একইভাবে বই বিক্রি করে দেন। পরে শিক্ষকদের কাছে তিনি ক্ষমা চাইল, শিক্ষকরা এ ব্যাপারটি চেপে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বইয়ের চাহিদা দিয়ে গোপনে বই বিক্রি করেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক প্রতিনিয়ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য গালাগালি করেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আহসানুল কবির তুহিন বলেন, তিনি ঘটনার দিন অফিসিয়াল কাজে খুলনা ডিডি অফিসে গিয়েছিলেন। সে কারণে তিনি কিছু জানেন না।

প্রধান শিক্ষকও তাকে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এনামুল হক মুকুল বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের সরকারি বই বিক্রির কোন আইন নেই। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এভাবে বই বিক্রি করতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নভেম্বর ২৪, ২০২২ at ১৮:০৩:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস