স্বীকৃতির দাবিতে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি তালিকাভুক্তির দাবিতে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে স্বীকৃতি থেকে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে শতাধিক বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। তারা দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মানববন্ধনে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মতিউল আলম বাচ্চু বলেন, ভারতের ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। পরে কুষ্টিয়া মিলিশিয়া ক্যাম্পে অস্ত্র জমা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানী স্বাক্ষরিত সনদ পেলেও পরবর্তীতে কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। সনদ প্রদানের যাচাই-বাছাই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আরেক জ্যেষ্ঠ নাগরিক ওমর আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমরা যাই। ভারতের শিকারপুরের রিসিপশন ক্যাম্পে নিবন্ধনের পরে জমসেদপুর ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তিন মাসের বেশি সময় প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করি। যৌক্তিক দাবি থাকা সত্ত্বেও আমাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

আরো পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে ঝিকরগাছার কায়েমকোলাতে প্রচার মিছিল

দৌলতপুর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া অন্তত ৪০০ মানুষ স্বীকৃতির আশায় আছেন জানিয়ে অধ্যক্ষ রেজাউল হক নামে আরেক সংগঠক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েও আমরা স্বীকৃতির দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। অথচ অনেকে আবার মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও স্বীকৃতি পেয়েছেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা কোনো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নই তার প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু এখনো আমাদের সরকারি তালিকাভুক্তির বিষয়টি আমলে নেয়া হয়নি।

পরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব শাজাহান আলী। তিনি বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারতের শিকারপুর রিসিপশন ক্যাম্পে ভর্তি হই। এরপর জমশেদপুর ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। পরে আমরা অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। স্বাধীনতা লাভের পর আমরা নিজ নিজ কমান্ডারের কাছে নিজেদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আতাউল গণি ওসমানির স্বাক্ষরিত সনদ গ্রহণ করি।

লিখিত ওই বক্তব্যে শাজাহান আলী আরো বলেন, পরবর্তীতে তারা মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসাবে কাজ করেন। ২০১৪ সালে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করলে ২০১৭ সালে প্রহসনের যাচাই-বাছাইয়ে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কোনো অবদান নেই বলে উল্লেখ করা হয়। যা আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অপমানজনক। সংবাদ সম্মেলনে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ডিসেম্বর ২৩.২০২১ at ২০:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর