দুর্যোগ মোকাবিলা-হ্রাসে অগ্রগামী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বঙ্গবন্ধু : প্রতিমন্ত্রী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দুর্যোগ মোকাবিলা ও হ্রাসের ক্ষেত্রে একজন অগ্রগামী প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭২ সালে জাতিসংঘে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য তিনিই প্রথম একটি সংস্থা গঠনের আহ্বান জানান। তারই ফলশ্রুতিতে জাতিসংঘে ‘ইউএনডিআরআর’ নামে একটি দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে রেডক্রস স্থাপন করে সেখানে প্রায় বিশ হাজার ভলেন্টিয়ার নিয়োগ প্রদান করেন। যারা উপকুলীয় অঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ দুর্যোগকালীন নানা কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরো পড়ুন:
ভোলায় বিদ্যালয়ে আগুন, হুড়াহুড়ি করতে গিয়ে ২০ শিক্ষার্থী আহত

বুধবার (২৩ নভেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমনে আগাম সতর্কবার্তা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জাতির পিতার এই কার্যক্রম আরো জোরদার করেছে। বর্তমানে প্রায় ৭০ হাজার ভলেন্টিয়ার নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। যেখানে শুধু পুরুষ নয়, অনেক মহিলারাও কাজ করছে এবং দূর্যোগ মোকাবেলায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমান সরকারের কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে ঘূর্ণিঝড় বা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলে মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায়।

“দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষকে প্রধানমন্ত্রী ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুর্যোগ সহনীয় ঘর দেয়া হয়েছে। এ ঘরগুলো হওয়ায় কারণে ঘূর্ণিঝড়, বন্যার সময় এখন মানুষকে ঘর হারা হতে হয় না, বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে হয় না। ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। চর অঞ্চলগুলোতেও ভিটি উঁচু করার প্রকল্প নেয়ার কারণে ওখানেও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে হয়নি। প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, আগাম সতর্কবার্তা যথাযথভাবে প্রদানের মাধ্যমে দুযোর্গকালীন ক্ষয়-ক্ষতির হার অনেকাংশ হ্রাস করা সম্ভব হয়। বর্তমান সরকার জনগণকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দুর্যোগ মোকাবেলা করছে- যা সারা বিশ্বে প্রশংসার দাবিদার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে সফলতা ও সারাবিশ্বে বাংলাদেশ যে রোলমডেল তার প্রধান কারণ দুর্যোগে মানুষের মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে আনা। যেখানে এক ঘূর্ণিঝড়ে এক লাখ ৩৮ হাজার লোক মারা গিয়েছিল সেখানে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসার পর আগাম সতর্কবার্তার কারণে এ মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর চারটি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছি। এ ঘূর্ণিঝড়গুলোতে ২৪ লাখ, ২০ লাখ ও সাড়ে ১০ লাখ লোককে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলাম। এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নেমেছিল।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, “দুর্যোগসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদক্ষেপ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় দেশের নেতৃত্ব স্থান হতে তৃণমূল পর্যন্ত সকলের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এসকল বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এ ধরনের সভা-সেমিনার আয়োজন করা দরকার।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ এবং লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান খন্দকার। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের-এর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুব।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহেদুর রশীদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সেমিনার উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ডিসেম্বর ২৩.২০২১ at ১০:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর