এক নজরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অর্জন

ছবি: সংগৃহীত

রোনাল্ড রিগ্যানের নামের সঙ্গে মিল করে মা-বাবা তার নাম রেখেছিলেন রোনালদো। পুরোনাম ক্রিশ্চিয়ানো। তার জন্ম পর্তুগালের মাদেইরাতে। বাবা জোসে দিনিস আভেইরো ও মা মারিয়া ডোলোরেস দস সান্তোস আভেইরো। বড় ভাই হুগো এবং বড় দুই বোন এলমা ও কাতিয়াকে নিয়ে এক সঙ্গে বেড়ে ওঠা তার ফুটবলের সংস্পর্শে আসেন মাত্র ৩ বছর বয়সে।

আরো পড়ুন:
টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া

কৈশোরে তার প্রিয় দল ছিলো ‘বেনফিকা’ যদিও তিনি তাদের প্রতিপক্ষ ‘স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগালে’ যোগদান করেন। মাত্র ৮ বছর বয়সে প্রথমে ‘আন্দোরিনহা’ নামে একটি অপেশাদার দলে তার ক্রীড়াজীবন শুরু করেন, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন তিনি ১৯৯৫ সালে, ১০ বছর বয়সেই তার সুনাম ছড়াতে থাকে পর্তুগালে।

মাদিয়েরার শীর্ষ দুটি দল ‘সিএস মারিতিমো’ ও ‘সিডি ন্যাশিওনাল’ তাকে পেতে উম্মুখ ছিল। অপেক্ষাকৃত বড় দল মারিতিমো আন্দোরিনহার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে অংশ নিতে পারেননি। ফলে সিডি ন্যাশিওনাল রোনালদোকে হস্তগত করে। ন্যাশিওনালের হয়ে সে মৌসুমে শিরোপা জেতার পর স্পোর্টিং দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি স্পোর্টিংয়ের অন্যান্য তরুণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে রোনালদো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দলে ‘ফুটবল কারখানা’ হিসেবে পরিচিত আলকোচেতে। এখানে তিনি প্রথম-শ্রেণীর প্রশিক্ষণ পান। স্পোর্টিং বুঝতে পারে আরো সমর্থন দরকার রোনালদোর। তাই তারা রোনালদোর মাকে তার কাছে রাখার ব্যবস্থা নেয়।

স্পোর্টিংয়ের পক্ষে তার অভিষেক খেলায় মোরেইরেন্সের বিপক্ষে দুই গোল করেন তিনি। পর্তুগালের হয়ে উয়েফা অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছেন তিনি উয়েফা অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে তার কৃতিত্বের কারণে তিনি ফুটবল বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণে সমর্থ হন। লিভারপুলের সাবেক ম্যানেজার জেরার্ড হুলিয়ার ১৬ বছর বয়সের রোনালদোর দিকে আকৃষ্ট হন। কিন্তু লিভারপুল তাকে দলে নিতে অস্বীকৃতি জানায় কারণ তিনি ছিলেন খুবই কম বয়সী ও শীর্ষ ফুটবলার হতে তার আরো সময় দরকার ছিল। ২০০৩ সালে ডেভিড বেকহ্যাম রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়ার পর স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হন রোনালদো। ফার্গুসনই তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এক কোটি ২২ লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানইউতে যোগদান করেন।

২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ নিশ্চিত করে যে, রোনালদো তাদের ক্লাবে যোগদান করবেন। ম্যানইউতে একের পর এক মৌসুমে দর্শকবাঞ্ছাপূরণকারী হয়ে গোল দিয়েছেন আর মৌসুম সেরা হয়েছেন একাধিকবার। রিয়াল মাদ্রিদেও কৃতিত্বের সঙ্গে খেলেছেন তিনি।যে বছর রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিলেন, ঠিক সেই বছরই ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় এবং ব্যালন ডি’ অরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ২০১০ সালের ৫ মে রিয়ালের হয়ে প্রথম হ্যাট্রিক করেন রোনালদো। রোনালদো ও গঞ্জালো হিগুইন ওই মৌসুমে মিলিতভাবে ৫৩ লিগ গোল করেন যা তাদেরকে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করা যুগল বানিয়ে দেয়।জুভেন্টাসে যোগদান করেন ২০১৮ সালে। এই ক্লাবে চারটি মৌসুম খেলার সুযোগ পান তিনি।

এরপর ২০২১ সালে আবারো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগদান করেন। তবে এবারে অর্জনের ঝুলিতে কিছুই অর্জন করতে পারেননি রোনালদো।বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবলার রোনালদো। একই সঙ্গে দানশীলতা ও পরোপকারী মনোভাবের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এক জরিপে তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দানশীল ফুটবলার হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ কারণে ফিলিস্তিনের একটি সংস্থা ২০১৬ সালে তাকে পার্সন অব দ্য ইয়ার অভিধায় ভূষিত করে।দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ক্লাব ফুটবল ছাড়াও তার আন্তর্জাতিক অর্জনও অগ্রগণ্য। ২০০৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন। এছাড়া, উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০৪ সালে রানার আপ, ২০১২ সালে ব্রোঞ্জ এবং ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।

নভেম্বর ২২, ২০২২ at ২১:৫৯:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস