যশোরে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে ন্যায্য দাম পাচ্ছে না চাষিরা

যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, এবার যশোর জেলায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। গত মৌসুমের চেয়ে এবার ৭ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যশোরে এখানে উৎপাদিত সবজির সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রয়েছে। বিশেষ করে চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের সবজির। এবারও চাষিরা সবজি চাষে আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান হবেন।

আরো পড়ুন:
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিনতাইয়ে : ৫ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

তবে পাইকারদের সিন্ডিকেটের কবলে পড়লে লাভ কিছুটা কমে যাবে। সবজির রাজ্যে এখন পুরোদমে শীতকালীন সবজির আবাদ চলছে। সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাল ও সবুজ রঙের শিম, মূলা, টমেটো, লাউ, বেগুন, পটল, লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক উল্লেখযোগ্য। তবে এই মুহূর্তে মাঠে মাঠে ফুলকপি, বাঁধা কপি, শিম, মূলা ও বেগুনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সবজির বাজার ধরতে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন বাজার ধরতে না পারলে কিছু দিন পর সবজির দাম আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

বারীনগর সাতমাইল হাটে দেখা যায়, নানা রকমের সবজিতে বাজার ঠাঁসা। পাইকারি হিসেবে প্রতি কেজি বাঁধাকপি ১২-১৪ টাকা, ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, লাল শিম ৩০ টাকা, সাদা শিম ২৫ টাকা, মুলা ৮-১০ টাকা, বেগুন ২০-২৫ টাকা, পটল ২০-২৫ টাকা ও লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লাউখালী গ্রামের সবজি চাষি মিন্টু মিয়া জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকারদের কারসাজিতে দাম কমে গেছে। আরেক চাষি লিয়াকত আলী জানান, বর্তমান বাজারে তারা সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক লাফে মুলার দাম কমে ৮-১০ টাকা কেজি হয়ে গেছে।

হিমাগার না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে কম দামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে। চাষিদের দাবি, সবজির রাজ্য চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের চাষিদের সুবিধার্থে হিমাগার স্থাপন করা হোক। পাইকারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও আব্দুল লতিফ জানান, বাজারে প্রচুর পরিমাণ সবজি রয়েছে। যে কারণে বেশি দামে কেউ কিনতে চাইছেন না। তাদের কোনো কারসাজি নেই। সবজি সরবরাহের তুলনায় ন্যায্য দামে সবজি কিনছেন তারা। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, সবজির রাজ্য হিসেবে যশোর জেলার পরিচিতি রয়েছে। প্রতি বছর এখানে দুই মৌসুমে সবজির আবাদ হয়।

বর্তমান মৌসুমে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হওয়ায় সবজি চাষে এখনো কোনো সমস্যা হয়নি। আগাম সবজি চাষে চাষিরা লাভবান হবেন। তিনি আরো জানান বর্তমানে বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কম । তবে এর আগে বেশি দাম পেয়েছে চাষিরা।

নভেম্বর ২১, ২০২২ at ১৭:১৪:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস