আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ যুদ্ধ

শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ যুদ্ধ। রোববার (২০ নভেম্বর) কাতারে বিশ্বকাপের ২২তম আসরের পর্দা উঠছে। এবারই প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। সে কারণে এবারের বিশ্বকাপে অটোমেটিক কোয়ালিফাই হয়ে গেছে আয়োজক দেশ কাতার। উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ইকুয়েডরের বিপক্ষে মাঠে নামবে কাতার। বিশ্বকাপের ৮৮ বছরর ইতিহাসে এই প্রথম শীতকালে হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ। মধ্যপ্রাচ্যে এর আগে কখনো ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়নি।

আরো পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, কৃষিই আগামী বাংলাদেশ গড়বে

ফিফার অঙ্গীকার ছিল ২০৩০ সালের আগে মেজর একটি টুর্নামেন্ট মধ্যপ্রাচ্যে আয়োজিত হবে। সে অনুযায়ী নানা প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে কাতার প্রথমবারের মতো আয়োজক হয় বিশ্বকাপের। শুধু কী তাই! ১৯৩০ থেকে ২০১৮, আগের বিশ্বকাপের ২১টি আসরই আয়োজিত হয়েছিল গ্রীষ্মকালে। অর্থাৎ মে থেকে জুলাইয়ের মধ্যে। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ আজ থেকে সারা বিশ্বের নজর থাকবে কাতারে ফুটবল যুদ্ধের দিকে।

এবারের বিশ্বকাপ কাতার আয়োজক হলেও, বিশ্বকাপে ফেবারিট দল অবশ্য তারা নয়। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা, নেইমারের ব্রাজিল এবং এমবাপ্পের ফ্রান্সের দিকে লেগে আছে ফেবারিটের তকমাটা। ফ্রান্স বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের এবার মিশন বিশ্বকাপ ডিফেন্ড করা। যা গত ৬০ বছরে কোন দল করে দেখাতে পারেনি। ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে টানা দুইবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর কোন দল এ কাজটাও করে দেখাতে পারেনি।

১৯৬২ সালে চিলি বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু হয় বিশ্বকাপের উদ্বোধনীতে থিম সংয়ের চল। সেবার পারফর্ম করেছিল চিলির ব্যান্ড লস র‌্যাম্বলার্স ও আর্জেন্টিনার গায়ক হরগে রগাস। এবারের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে বৈচিত্র্য। ব্যাপকতা আর জাঁকজমকতায় কার্পণ্য রাখছে না মোটেও। সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে যাবেন ৬০ হাজার দর্শক। শাকিরা ও কিজ ড্যানিয়েলের ব্যাপারে রহস্য থাকলেও স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি পারফর্ম করবে কোরিয়ান ব্যান্ড বিটিএস। থিম সং গাইবেন লিও বেবি। তার সঙ্গে নাচবেন মানাল, রেহমা আর নোরা ফাতেহি। থাকছে জমকালো আতশবাজির ঝলকানি।

স্বপ্নের আল বাইত স্টেডিয়ামে হবে স্বপ্নযাত্রার সূচনা। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা। হয়তো থেমে যাবে সব ব্যস্ততা। চোখজোড়া লেপ্টে যাবে ওই টিভি সেটের সামনে। কাতার মহাযজ্ঞের শুরুটা হবে যেখানে। কৌতূহলের তুঙ্গে তাই কী থাকবে বিশ্বকাপের উদ্বোধনীতে। কাতারের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে থাকবে বিশেষ প্রদর্শনী। বিশাল সব ইমারতের পেছনের গল্প। বিশ্বকাপের ইতিহাসও পাবে প্রাধান্য।

এবারের বিশ্বকাপ কাতার আয়োজক হলেও, বিশ্বকাপে ফেবারিট দল অবশ্য তারা নয়। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা, নেইমারের ব্রাজিল এবং এমবাপ্পের ফ্রান্সের দিকে লেগে আছে ফেবারিটের তকমাটা। ফ্রান্স বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের এবার মিশন বিশ্বকাপ ডিফেন্ড করা। যা গত ৬০ বছরে কোন দল করে দেখাতে পারেনি। ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে টানা দুইবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর কোন দল এ কাজটাও করে দেখাতে পারেনি।

অপরদিকে আর্জেন্টিনার দিকেই এবার বিশেষজ্ঞরা বাজি ধরছেন বেশি। এর বেশ কারণও আছে। গত আড়াই বছর ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে কোনো ম্যাচ হারেনি স্ক্যালোনির দল। এছাড়াও মেসি, মারিয়া, ডি পল, মার্টিনেজরা আছে দারুণ ফর্মে। শুধু তাই নয়, টিম কম্বিনেশনে সেরার কাতারেই রয়েছে আলবেসেলেস্তারা। ফলে এবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে দাবিদার মানাই যায়।

তবে কথায় আছে, কোন কিছুই পারফেক্ট নয়। ফলে আর্জেন্টিনার দলের মাঝেও কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। স্ক্যালোনির মিডফিল্ডের সেরা পছন্দের একজন লো সেলসো। ইনজুরির কারণে এবারের বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না তার। যা মিডফিল্ডে আর্জেন্টিনাকে ভোগাবে। তবে তাদের বড় সমস্যার কথাটা মেসিই কিছুদিন আগে জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, এবারের বিশ্বকাপে তারা ফেবারিট নয়। মেসির চোখে ফেবারিট ফ্রান্স এবং ব্রাজিল। আর তাদের ফেবারিট না মানার কারণও জানিয়েছেন তিনি। মূলত গত আড়াই বছর ধরে তারা বেশি ইউরোপের দলের সঙ্গে খেলেনি। যার কারণে ইউরোপের দলের সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কম। আর এটাই মেসিসহ সব আর্জেন্টিনা সমর্থকের কাছে বড় ভয়ের বিষয়।

এদিকে ব্রাজিলকেও ফেবারিট মানা হচ্ছে। অক্সফোর্ড, অ্যালান টুরিং ইনস্টিটিউটের গবেষণার মতে তো এবারের বিশ্বকাপ উঠবে নেইমারের হাতেই। ২০০২ সালে কাকা, রোনালদিনহো, রোনালদোর হাত ধরে পঞ্চম বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর ২০ বছর পেরিয়ে গেছে, এর মাঝে সেমিফাইনালের বাধাই পেরুতে পারেনি সেলেসাওরা। তবে এবারের ব্রাজিল দলে নেই তেমন কোন দুর্বলতা। তরুণ এবং অভিজ্ঞর সংমিশ্রণে এবার বিশ্বকাপটা ব্রাজিলের হাতে উঠলে উঠতেও পারে।

এদিকে এ তিন দল ছাড়াও ফেবারিটের তালিকায় আছে চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, ২০১০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন এবং সময়ের অন্যতম সেরা দল ইংল্যান্ড এবং বেলজিয়াম। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, এ দলগুলো সেমিফাইনালের বাধাই পেরুতে পারবে না। যে যাই বলুক, মাঠে বল না গড়ালে কোন কিছুই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কারণ ফুটবল একটি অনিশ্চয়তার খেলা। মাঠে বল গড়ানোর পর অনেক গবেষণাই ভুল প্রমাণিত হয়। এবারও এমনটা হবে কিনা তা জানা যাবে ডিসেম্বরের ১৮ তারিখে।

ডিসেম্বর ২০.২০২১ at ০৯:৫৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর