পাইকগাছায় শিরিস গাছের ডালের আঠা সংগ্রহে হিড়িক পড়েছে

আশানুরুপ মূল্য পাওয়ায শিরিস গাছের ডালে লেগে থাকা আঠা জাতীয় প্রলেপ সংগ্রহের হিড়িক পড়ে গেছে। গত এক মাস ধরে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মহাধুমধামের সাথে এই প্রলেপ সংগ্রহের কাজ চলছে। কাজকর্ম ও নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃন্ধসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ শিরিস গাছের ডালে লেগে থাকা এই আঠা জাতীয় প্রলেপ সংগ্রহ করছে। তারা দাম পাচ্ছে আশানুরুপ। তাই আঠা লাগানো ডাল সংগ্রহে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেঘুরে ডাল ক্রয় করছে। শিরিস গাছের ডালের আটা কোথায় যাচ্ছে, সেটা কেউ সঠিকভাবে তারা বলতে পারছে না। লোক মুখে শোনা যাচ্ছে,কেউ বলছে ঢাকায যাচ্ছে আবার কেউ বলছে এটি ভারতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিয়ে কি করা হচ্ছে, সেটাও সঠিক ভাবে কেউ বলতে পারছে না।আর কোথায় যাচ্ছে তা নিযে সংগ্রহকারি, ক্রেতা ও বিক্রেতার কোন মাথা ব্যাথা নেই। তারা টাকা পাচ্ছে বিক্রি করছে।

আরো পড়ুন:
ভূঞাপুরে গরু ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৮

প্রতিদিন সন্ধ্যায় উপজেলার কপিলমুনি ও শ্যামনগর বাজারে বিক্রি হচ্ছে।বাহিরের ব্যবসাহীরা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।স্থানিয় বিক্রেতা মো. সাইদুল গাজী, রহমত আলী, ফরিজুল জানান, কপিলমুনি হাসপাতালের সামনে ও মালতে সন্ধ্যায় হাট বসে। বাহিরের ব্যাপারীরা এসে কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন ভোর হতে স্থানিয় ক্রেতারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে এগুলো কিনে নিচ্ছে।গাছ থেকে ডাল কেটে শত শত ভ্যান ও ইজিবাইক বোঝাই করে বাড়ি নিয়ে আঠা ছাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে আয হচ্ছে ভাল। শতশত মানুষ বিকল্প আয় হিসেবে এই কাজে ব্যস্থ সময় পার করছে।

জানা গেছে, নওগা ও রাজশাহীতে গালা,পালিস,রং তৈরির কেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। এ বিষয়ে কপিলমুনি বাজারের ব্যবসাহী নারান চন্দ্র সিংহ বলেন, শিরিসের আঠা রাজশাহী ও নওগায় যাচ্ছে, সেখানে কারখানা আছে।মেশিনে রিফাইনিং করে মণ্ড তৈরি করা হয়। এদিয়ে ফর্নিচারের পালিস করা গালা,সিল গালা সহ বিভিন্ন কেমিক্যাল জাতিয় দ্রব্য তৈরি করা হয়।

পাইকগাছার নতুন বাজারের কাঠ ব্যবসাহী সবুর হোসেন বলেন,আমি তিনটি শিরিস গাছ কিনেছি ১৭ শত টাকায়।আর মেলেকপুরাইকাঠি গ্রামের মনিরুলের নিকট তিনটি গাছের আঠার প্রলেপ লাগা চিকন ডাল বিক্রি করেছি ২ হাজার ৫শত টাকায়। চিকন ডালগুলির ওজন এক মন হতে পারে। আঠা লাগা শিরিসের ডালের ব্যাপক চাহিদা। কে কার আগে ডাল কিনতে পারবে তার জন্য ব্যবসাহীরা বিভিন্ন এলাকায় ছুটে বেড়াছে। ব্যবসাহী সাইদুর জানান,আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে গাছের ডাল ক্রয় করে গাছ থেকে সেগুলো নিজেরা ভেঙে নিয়ে আসছি।

সারাদিন ডাল ক্রয় করে সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে আঠা গুলো পরিষ্কার করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেই।ডাল থেকে আঠার মত প্রলেপ ছাড়াতে কেজি প্রতি ৫০ টাকা দিতে হয়। এ আঠাগুলো সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে হাটে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ডাল থেকে ছাড়ানো এ আঠা কেজি প্রতি ২শত টাকা থেকে ২৫০টাকা দরে বিক্রয় করছি। এতে প্রতিদিন ৩ জনের প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ হয়।

নভেম্বর ১৯, ২০২২ at ১৭:১৫:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস