শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মচারীর মাধ্যমে ছাত্রীকে প্রশ্ন দেওয়ার অভিযোগ

কর্মচারীকে বাধ্য করে সামিজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারের মাধ্যমে সেমিস্টার পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে ছাত্রীকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কেমিকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। গত ১৬ নভেম্বর বুধবার কেমিকৌশল বিভাগের অফিস সহায়ক হাজ্জাজ বিন আজিজ উপাচার্য বরাবর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ জানালে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

আরো পড়ুন:
বিশ্বকাপের আগে স্কোয়াডে পরিবর্তন এনেছে আর্জেন্টিনা

উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে কেমিকৌশল বিভাগের অফিস সহায়ক (দৈনিক মজুরীভিত্তিক) হাজ্জাজ বিন আজিজ জানান, ২০১৭ সাল থেকে আমি কেমিকৌশল বিভাগে কর্মরত আছি। আমার বিগত দিনের কর্মকান্ডের জন্য কেউ কখনও অসন্তোষ প্রকাশ করে নি। কিন্তু ৯ নভেম্বর ২০২২বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুজন চৌধুরী দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রীর মেসেঞ্জারে প্রশ্নপত্রের ছবি দিতে বলেন। জানতে চাইলে স্যার বলছিলেন, এটা বিগত সালের প্রশ্ন। আমি প্রশ্ন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বলেছিলেন কোনো সমস্যা হবে না কারন প্রশ্নের উপরে কোর্সের নাম, সাল, বিভাগ কোনোকিছুই লেখা ছিলো না।

অফিস সহায়ক হাজ্জাজ বিন আজিজ আরও জানান, আমি কোনোকিছু বুঝে ওটার আগেই সব করিয়ে নিয়েছেন শিক্ষক। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক ড. সুজন চৌধুরী আমাকে ডেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঘটে যাওয়া সকল সত্য বিষয়গুলো না বলার জন্য আদেশ দেন। পরবর্র্তীতে বিভাগীয় চেয়ারম্যান স্যারের নিকট সবকিছু খুলে বললে তিনি আমাকে কলার ধরে মারতে উদ্যত হন যা সিসি ক্যামেরায় দেখা যাবে বলে আশা করছি। আমি কর্মচারী বলে আমার উপর সকল অভিযোগ আনা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আমি নির্দোষ এবং আমি যা করেছি ওই শিক্ষকের নির্দেশনায়ই করেছি।

বিষয়টি অস্বীকার করে ড. সুজন চৌধুরী বলেন, উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে অফিস সহায়ক হাজ্জজ বিন আজিজ যে অভিযোগ করেছেন সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সেমিস্টার পরীক্ষার প্রশ্ন চুরির বিষয়টি গত ১৪ নভেম্বর বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষে সকল শিক্ষকের সামনে ওই কর্মচারী লিখিতভাবে স্বীকার করেছে এবং ক্ষমা চেয়েছে যা বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষের সিসি ক্যামেরাতে পুরো বিষয়টি রেকর্ড আছে। সে নিজে দায় স্বীকার করে আবার কেন আমার বিরুদ্ধে বলছে আমি বুঝতে পারছি না।

নিজেকে বাঁচানোর জন্য সে হয়তো এমন মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক ব্যাপার আমার জন্য। আমি শিক্ষক হয়ে কেন এমন করবো! তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে জানতে পারলাম, কর্মচারী হাজ্জাজ দ্বিতীয় বর্ষের বেশকিছু মেয়েকে মেসেঞ্জারে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করছে। তবে কোন কোন ছাত্রীকে উত্যক্ত করছেন সেটা এখনও জানতে পারি নি।

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পরই বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে ওই শিক্ষক ও কর্মচারীকে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছি। বিভাগের একাডেমিক কমিটি আগামী রবিবারের মধ্যে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ জমা দেওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা করা হবে।

ডিসেম্বর ১8.২০২১ at ১১:২৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর