পাইকগাছায় দুপুরে টিফিন ক্যারিয়ার সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

পাইকগাছায় দুপুরের খাবার অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টিফিন ক্যারিয়ার সরবরাহ ব্যবস্থাপনা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। টিফিনওয়ালা ব্যবসাহী বা কর্মচারীদের বাসা থেকে দুপুরের খাবার নিয়ে তাদের অফিসে পৌছে দেয়। বাড়িতে রান্না করা খাবার দুপুরে সময় মত কমস্থলে বসে খাওয়া যাচ্ছে। যাহা স্বাস্থ্য সচেতনতায় অনুকরণীয়ন দৃষ্টান্ত। চাকুরিজীবী ও ব্যবসাহীদের প্রতিদিন দুপুরের খাবার খেতে হয় কর্মক্ষেত্রেই। বাসা থেকে খাবার বহন করে নিয়ে যাওয়ার ঝুকি ঝামেলা পোহাতে চান না অনেকেই। সকালে তৈরি খাবার দুপুরে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ফলে দুপুরে খাবারের সময় অস্বাস্থ্যকর ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:
তানু হত্যার প্রতিবাদে, যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল

ভালো কোন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে খেতে চাইলে গচ্চা দিতে হয় বড় অংকের টাকা। এছাড়া সাস্থ্যরে জন্য অনিয়মও হয়ে যায় বেশ। অধিকাংশ ব্যবসাহী ও অফিস কর্মচারীরা বাইরের বা হোটেলের খাবারের চেয়ে ঘরে-তৈরি খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে, সাধারণত স্বাদ ও পরিচ্ছন্নতার জন্যে এই ব্যবস্থার উৎপত্তি। দুপুরের আগে টিফিনওয়ালা বাসাবাড়িতে গিয়ে লাঞ্চবক্সে (ডাব্বা) ভরে দেয়া গরম গরম খাবার নিয়ে যায়, সাইকেল চেপে তা লোকদের কর্মস্থলে পৌঁছে দেয় এবং আবার খালি লাঞ্চবক্স ফিরিয়ে দিয়ে যায়। সল্প খরচে টিফিনওয়ালার মাধ্যমে কমস্থলে বসে বাড়ির তৈরি গরম খাবার খাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলার বোযালিয়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ ব্যবসা করেন পাইকগাছা বাজার,নতুন বাজার এলাকায। এসকল ব্যবসাহীদের মধ্যে অনেকের দুপুরের খাবার সরবরাহ করেন দুলাল সাধু ও শুধাংসু সাধু। দুপুরের আগে তাদের বাড়ি থেকে খাবার সংগ্রহ করে ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে কর্মস্থলে পৈৗছেয়ে দেন। প্রতিটি টিফিন বক্স বাবদ দশ টাকা করে পান। এ বিষয দুলাল সাধু বলেন, প্রায ২০ বছর এ কাজ করছি। সময়মত সকলের খাবার নিয়ে যেতে হয়।এর জন্য কোথাও বেড়াতে যেতেও পারিনা।বয়স হয়েছে তাই অন্য কাজ করার ক্ষমতা কমে গেছে।যাহা আয হয় তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চালাতে হয়।তবে সময মত তাদের দুপুরের খাবার পৈৗছেয়ে দিতে পারলে ভালো লাগে।

তারা বাড়ির তৈরি গরম খাবার খেয়ে তৃপ্তি পায়।আবার অনেকে দুপুরের খাবার নিজ ব্যবস্থায় নিয়ে যান। জানা যায়, ১৮৯০ সালে মুম্বাই শহরে পার্সি ব্যাংকে কর্মরত মহাদেও হাভাজি বাচ্চে কর্মস্থলে দুপুরে ‘বাড়িতে তৈরি’ খাবার খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং তার এই বাসনা পূরণের জন্যে একজনকে নিয়োগ দেন। ধীরে ধীরে আরও অনেকে এই ধারণা পছন্দ করতে শুরু করেন এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৬৫ সালে ‘নতুন মুম্বাই টিফিন বক্স সাপ্লায়ারস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রিভুক্ত করেন। ১৯৬৮ সালে এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক অংশ হিসেবে ‘মুম্বাই টিফিন বক্স সাপ্লায়ারস অ্যাসোসিয়েশন’ নথিভুক্ত হয়। শত বছর পরেও তাদের ব্যবসা বেশ সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।

দেশে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত অঞ্চল মতিঝিল ব্যাংক ও অফিসপাড়া হিসেবে পরিচিত। অঞ্চলটিতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন লাখ লাখ মানুষ। এসব মানুষের একটি বড় অংশ দুপুরের খাবারের জন্য নির্ভর করেন ক্যাটারিং সার্ভিসের ওপর। কর্মজীবী এসব মানুষকে কেন্দ্র করে অঞ্চলটিতে কয়েকশ’ নিম্ন আয়ের মানুষ গড়ে তুলেছেন বিশাল ক্যাটারিং ব্যবসা। অফিসে অফিসে খাবার সরবরাহ করা এই ক্যাটারিং ব্যবসায় জড়িতদের বড় অংশের বসবাস মতিঝিল সংলগ্ন ফকিরাপুলে। ২০০০ সালের দিকে ব্যবসাটি মতিঝিল থেকে ফকিরাপুলে বেশি জনপ্রিয় ছিল। ফকিরাপুলে গড়ে ওঠা প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেন্দ্র করে মূলত বাসায় রান্না করা খাবার প্লাস্টিকের বাটিতে করে সরবরাহের মাধ্যমে একশ্রেণির নারী এ ব্যবসা করতেন।

নভেম্বর ১৩,২০২২ at ১৮:৪১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/এসআর