রিজার্ভের এক পয়সাও নষ্ট করেনি সরকার: প্রধানমন্ত্রী

শনিবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার প্রধান বলেন, বিএনপি নেতারা সব সময় রিজার্ভের টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা থেকে কোন অর্থ অপব্যবহার হয় না।

বিএনপি নেতারা সব সময় বিষয়টি নিয়ে কথা বলে, কারণ তাদের নেতা তারেক রহমানকে মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং তিনি এখন পলাতক আসামি। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময়ে এটি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার হয়। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হই। সরকার প্রধান আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ, যাতায়াত, আমদানি থেকে শুরু করে সবকিছুই প্রায় বন্ধ ছিল।

আরো পড়ুন:
ফের কিং খান, বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান আটক!

আর যখনই যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্মুক্ত হলো তখন আমাদের আমদানি করা, পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার জন্য ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থের বাড়তি জোগান ও রিজার্ভ থেকেই দিতে হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশের মত বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন প্রদান এবং করোনা টেস্টের ব্যবস্থা যেটা পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশও করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে খাদ্য পণ্যের দাম,পরিবহন খরচ, জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টাসহ যে সমস্ত পণ্য আমদানি করতে হয়, তার দাম বেড়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ চাল উৎপাদন করলেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিছু কিছু আমদানি করতে হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেটুকু খরচ করেছি তা জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে।

জনগণের খাদ্য কেনা, ওষুধ কেনা জনগণের মঙ্গলের জন্যই করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ আমাদের ক্রয় করতে হচ্ছে, নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। তাছাড়া আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান ক্রয় করেছি। নদী ড্রেজিং যেমন নিজেদের অর্থে করছি তেমনি কিছু কিছু বিনিয়োগও আমরা করছি। তিনি বলেন এই টাকা যদি তার সরকার অন্য দেশের ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নিতো তাহলে সুদ সমেত টাকা পরিশোধ করতে হতো। আর আমাদের ব্যাংক থেকে দিলে যেটা সোনালী ব্যাংক থেকে আমরা দিচ্ছি তাহলে ওই সুদ সমেত টাকা দেশের টাকা দেশেই থেকে যাচ্ছে এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রায় ৮ বিলিয়নের মত আমরা খরচ করছি। এখান থেকে কিছু ডলার শ্রীলংকার অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় ধার হিসেবে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, কাজেই এখানকার টাকা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি, যেটা তাদের মনে সবসময় ভয় থাকে তারা ঐরকম বলে।

কাজেই মানিলন্ডারিং যাদের অভ্যাস তারা খালি এটাই জানে যে, টাকা বোধহয় সব নিয়েই যেতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বক্তব্য রাখেন। সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। আশুলিয়া প্রান্তে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানসহ সর্বস্তরের মানুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

নভেম্বর ১২, ২০২২ at ১৭:৫৭:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস