বেশি দামেও মিলছে না চিনি, ভোজ্যতেল উধাও

বাজারে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় তেল মিলছে না। সেই সঙ্গে ৯০ টাকার চিনি ১২০ টাকা দিয়ে কিছু কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তা। এরই মধ্যে জাতি সংঘ বিশ্বমন্দার আশঙ্কা প্রকাশের পর বিভিন্ন পণ্যের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

আরো পড়ুন:
আমন চাষে ধস সাতক্ষীরায়, পোকার আক্রমণ ও অনাবৃষ্টিতে

 ইতোমধ্যে তেল ও চিনি বাড়তি দামেও বাজারে মিলছে না। শুধু তেল বা চিনি নয়, বাজারে নতুন করে সংকট হচ্ছে আটা ও ময়দাতেও। পাড়া-মহল্লার দোকানে ক্রেতারা কোনো একটি দোকানে আটা-ময়দা পেলেও হয়তো চিনি পাচ্ছেন না। আবার কোথাও গিয়ে চিনি মিললেও সেখানে নেই সয়াবিন তেল কিংবা আটা। আবার কোথাও এসব পণ্যের মোড়কজাত দুয়েকটি প্যাকেট থাকলেও নেই খোলা পণ্য। কেউ আবার বাধ্য হয়ে বেশি দামে পণ্য কিনছেন।

রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুয়েকটি দোকান বাদে অধিকাংশ দোকানেই কোনো না কোনো পণ্য নেই। বিশেষ করে, বেশি সংকট সয়াবিন তেলের। মাত্র একটি দোকানে ভোজ্যতেল পাওয়া গেলেও সেখানে বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে, তেল দেয়া প্রায় বন্ধ রেখেছে কোম্পানিগুলো। যাদের কাছে আগের কেনা তেল রয়েছে, তারা কিছু কিছু করে বিক্রি করছেন এখন। তিনি বলেন, পুরনো কাস্টমারদের কাছে তেল বিক্রি করছি।

মালিবাগ বাজারে নোয়াখালী স্টোরের মালিক এনামুল হক বলেন, দেড় যুগের ব্যবসায়িক জীবনে পণ্যের এমন সংকট দেখিনি। সরকার যখন থেকে দুর্ভিক্ষের কথা বলেছে, তখন থেকে বাজারে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। পণ্য সরবরাহ ঠিকমতো না দিয়ে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে জিম্মি করে রেখেছে কিছু কোম্পানি। প্রকৃতপক্ষে পরিস্থিতি কী, সেটা জানার উপায় আর নেই।

রাজধানীর খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। তিনদিন আগেও এ চিনির দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা কম ছিল। আর প্রতি কেজি খোলা আটা ৬৫ টাকার নিচে মিলছে না। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরের ব্যবধানে বাজারে আটার দাম ৭৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ। শুধু আটা নয়, একইভাবে ময়দার দামও বেড়েছে বাজারে। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে। টিসিবি বলছে, বছরের ব্যবধানে ময়দার দাম ৭০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৬ শতাংশ।

আটার বিষয়ে মুদি দোকানিরা বলছেন, প্যাকেটজাত আটার সরবরাহ কিছুটা কম। এক সপ্তাহ আগে খুচরা ব্যবসায়ীরা ডিলারদের কাছ থেকে যেসব আটা ও ময়দা সংগ্রহ করেছেন, সেগুলোই বিক্রি করছেন দোকানিরা।  এছাড়া বাজারে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ডিমের ডজন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এই দুই পণ্যও আটকে আছে বাড়তি দামে। সেই সঙ্গে রয়েছে সবজির বাড়তি দামও। সব মিলে চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন ভোক্তারা।

নভেম্বর ১২,২০২২ at ৯:৪২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/এসআর