নাইক্ষ্যংছড়িতে মাদরাসা দপ্তরীকে হত্যার দায়ে ৬ষ্ট ও ৮ম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী আটক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকঢালা মহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসার দপ্তরী হাফেজ দিদারুল আলমকে দা দিয়ে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যার ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে একই মাদরাসার ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্র হাফেজ ছৈয়দুল আমিনকে(১৮) আটক করেছে পুলিশ। সে একই এলাকার মো. হোসেনের ছেলে। এ ছাড়াও একই মাদ্রাসার একই এলাকার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া তানভিরুল ইসলাম আকাশকে জিজ্ঞাসা করার জন্য আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছৈয়দুল আমিন খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) টান্টু সাহা। বুধবার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ আটক ছৈয়দুল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে আমতলীমাঠ ঘটনাস্থল খানাকা মসজিদের পুকুরের পশ্চিম পাশের ধান ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি দা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও স্থনীয়রা জানান, আটক ছৈয়দুল আমিন ও নিহত দিদারের মধ্যে গত সোমবার ৬ষ্ট শ্রেণির এক ছাত্রীর বিষয়ে তর্কাতর্কি হয়। ছৈয়দুল আমিন ওই ছাত্রীর সঙ্গে ক্লাস রুমে একান্তে কথা বলার সময় দপ্তরী দিদার দেখে ফেলে।

আরো পড়ুন:
বৃদ্ধের ধর্ষনে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হল পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী

দিদার এই বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে ওইদিন মাদরাসায় বৈঠকে বসে শিক্ষকরা। ঘটনার একদিন পর মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দিদার আলমকে গলায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত দিদার আলমের চার বছরের মেয়ে ও আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে বলে জানা যায়। মাদরাসায় বৈঠকের সূত্র ধরে পুলিশ বুধবার সরেজমিন তদন্ত করে প্রকৃত আসামীকে আটক করতে সক্ষম হন। ঘটনার কথা স্বীকার করে মামলার আয়ু এসআই ধিমান বড়ুয়া বলেন তাদের দুজনকে থানায় আনা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।

খুন হওয়া দিদারুলের পরিবার তাদের দুজনকে আসামি করে মামলা করলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এলাকাবাসী জানান, পুলিশ খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং রাত দুইটায় লাশ উদ্ধার করে। ৯ নভেম্বর সকালে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় এবং বুধবার ৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন। নিহতের স্ত্রী খালেদাবেগম জানান, তার স্বামী দিদারুল মাগরিবের আগে বাচ্চাদের জন্য নাস্তা আনবে বলে বাড়ি থেকে দোকানে যায় এবং এশার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন।

এদিকে স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, দিদারুল একজন হাফেজ হলেও দুই বছর আগে মাসিক ২০০০ টাকা বেতনে দপ্তরে চাকরি নেন এবং সরকারিভাবে দপ্তরি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হলে সেখানে সে আবেদনও করেন আর তারা প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন। চাকঢালা মহিউ সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান,দুই ছাত্রদের সমস্যার বিষয়টি মাদ্রাসা সমাধান হয়েছে আর দিদারুল আলম একজন শান্ত ও ভদ্র ছেলে।

সে মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকে সকলের সাথে মিলেমিশে কাজ করে আসছে। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন জানান, আটক ছৈয়দুল আমিনকে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে একটি রক্তমাখা দা উদ্ধার করে। নারী সংক্রান্ত বিষয়ে এই হত্যাকান্ড অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

নভেম্বর ১০,২০২২ at ১৬:৩১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস