শখের বসে ড্রাগন বাগান, মৌসুমে বিক্রি ৮০ লাখ টাকা

আল-আমিন শোভন, বয়স ৪৫। পেশায় একজন সংবাদকর্মী, কিন্তু নেশা কৃষিবিপ্লব। শখের বসে কৃষিতে আসলেও এখন তার রয়েছে তেত্রিশ বিঘার সুবিশাল একটি ড্রাগন বাগান। সেখানে বাণিজ্যকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন। এক মৌসুমে ৮০ লাখ টাকার বেশি ড্রাগন ফল বিক্রি করে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পর পুরো জেলায় নজর কেড়েছেন তিনি। আল-আমিন শোভন টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার মৃত নূরুল ইসলাম মিয়ার ছেলে এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশন আনন্দ টিভির স্থানীয় সংবাদকর্মী। সংসার জীবনে তিনি এক ছেলে ও মেয়ের জনক। আল-আমিন শোভন জানান, তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সৎ সংবাদকর্মীদের সংসারে বরাবরই আর্থিক টানাপোড়েনের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।

আরো পড়ুন:
কখনো বিচারপতি আবার কখনো জজ, ধরা পড়ল গোয়েন্দা পুলিশের হাতে

সে চিন্তা থেকে তিনি কৃষির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। শোভন বলেন, তিনি একজন কৃষকের সন্তান। সে হিসেবে কৃষি তার পছন্দের জায়গা। দুই বছর আগে করোনার সময় গতানুগতিক কৃষির বাইরে গিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করলেও বর্তমানে ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচটিকড়িতে তিনবিঘা এবং উপজেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে ত্রিশ বিঘার ওপর বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। প্রথমদিকে অনেকে তাকে পাগল ভাবলেও বর্তমানে তার এমন সাফল্যে বাহবা দিচ্ছেন সবাই। তার এ তেত্রিশ বিঘা জমি চাষাবাদ করতে সোয়া কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি পুঁজি উঠিয়ে আনতে না পারলেও এক মৌসুমে তিনি ৮০ লাখ টাকার বেশি ড্রাগন ফল বিক্রি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। যেহেতু ড্রাগন একটি দীর্ঘমেয়াদি ফল গাছ, প্রায় ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছর ফল দিয়ে থাকে সেহেতু আগামী বছর তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলেও আশা করছেন। ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ড্রাগন একটি বিদেশি ফল, এ ফলের পুষ্টিগুণ অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি। এ ফল খেলে বার্ধক্য প্রতিরোধ করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, চুল পড়া রোধ করে, ত্বক লাবণ্য ও সতেজ রাখে।

তিনি আরো জানান, আল-আমিন শোভন সাংবাদিকতার পাশাপাশি মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলার প্রায় তেত্রিশ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষাবাদ শুরু করেন। এর মধ্যে তিন বিঘার একটি বাগান ভূঞাপুর উপজেলার কাছেই। সেই সুবাদে এ বাগান প্রতিনিয়তই তিনি ভিজিট করছেন। কিছুদিন আগে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষার্থী বাগানটি পরিদর্শন করে গেছেন। এছাড়াও প্রতিনিয়ত স্থানীয় প্রশাসনসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বাগানটি দেখতে আসছেন। তিনি এ মৌসুমে ড্রাগন ফলসহ অন্যান্য ফল মিলিয়ে প্রায় এক কোটি টাকার ফল বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।

নভেম্বর ০৯,২০২২ at ২০:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস