ঝিনাইদহে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ!

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৭নং মহারাজপুর ইউনিয়নের কানুহরপুর গ্রামের হেলাল উদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে নজরুল ও কামরুল গংদের ৯২ শতাংশ জমি প্রভাব খাটিয়ে দখল করে জোর করে ধান চাষ করা এবং জমির উপর একতলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে একই এলাকার মৃত আলাউদ্দীনের পুত্র চাচাত ভাই লিটন বিশ্বাস গংদের বিরুদ্ধে।জানা গেছে, হেলাল উদ্দীন বিশ্বাসের দুই ছেলে নজরুল ইসলাম বিশ্বাস এবং কামরুল ইসলাম বিশ্বাস, দাদা এবং পিতার মাধ্যমে জমি প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখল করে আসছিল।

আরো পড়ুন:
পাইকগাছায় জাতীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন

কিন্তু তাদের চাচাত ভাই লিটন বিশ্বাস গত ৬মাস আগে কামরুল-নজরুলের নিকট থেকে অস্থায়ীভাবে বসবাসে বাড়ি তৈরি করার জন্য ৫ শতক জমি চায়, কিন্তু নজরুল দিতে অস্বীকৃতি জানালেও শরীকদের অনুরোধে অস্থায়ী ভাবে তাদের বসবাসের জন্য ৫শতক জমি দেয়। উক্ত জমিতে লিটন বিশ্বাস টিনের ছাপড়া ঘর বানিয়ে বসবাস করতে থাকে।পরবর্তীতে লিটন বিশ্বাস গ্রামের কিছু প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে নজরুল এবং কামরুলের আর.এস ২৯১খতিয়ানের ১০৮৮ ও ১০৯৪ দাগের ১৫ শতক জমি জোর পূর্বক দখল করে গত ৩মাস আগে পাঁকা বাড়ির নির্মান কাজ শুরু করে। তখন নজরুল বাড়ি নির্মান কাজ বন্ধ করতে জমির উপর আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করেন।

১৪৪ধারা মামলার প্রেক্ষিতে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ গিয়ে বাড়ি নির্মান কাজ সাময়িক বন্ধ করলেও, লিটন বিশ্বাস স্থানীয় প্রভাবশালী আরিফ আহম্মেদ জনি এবং শিপন বিশ্বাসের মাধ্যমে পুলিশকে ম্যানেজ করে পূনরায় ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে। লিটন বিশ্বাসের অনেক ভাই থাকায় এবং তাদের লাঠির জোর অনেক বেশী হওয়ার কারনে এবং থানা পুলিশের কোন সহায়তা না পাওয়ায় নজরুল ও কামরুল অবৈধ্য ভাবে ভবন নির্মান কাজের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার অর্ন্তগত ১০১নং কানুহরপুর মৌজার কানুহরপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বিশ্বাস ও কামরুল ইসলাম বিশ্বাস দুই ভাইয়ের সঙ্গে একই এলাকার লিটন বিশ্বাস গংদের কানুহরপুর মৌজার (জেএল নং ১০১) আর.এস চুড়ান্ত ২৯১ নম্বর খতিয়ানের ১০৮৮,১০৯৪,৬২৯,৮৯৬ ও ১০৯৫ নম্বর দাগের যথাক্রমে ৭,৮,২১,৪৯ ও ৭ সর্বমোট ৯২ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বেশ কয়েকবার এ নিয়ে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

আপস মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, নজরুল ইসলাম গং চলতি বছরের ১৫ফেব্রুয়ারী ঝিনাইদহ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ঝিনাইদহ পিটিশন নং-১১৫/২০২২,ধারা ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ও বিজ্ঞ আদালতের স্বারক নং ৩৩৩,তাং ১৫/০২/২০২২ ইং মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত বিরোধীয় জমিতে উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ১৮জানুয়ারি ২০২২ রাতের অন্ধকারে লিটন বিশ্বাস গং বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রথমে একটি টিনের ছাপড়া স্থাপন করে এবং পরবর্তীতে ছয়মাস পরে উক্ত জমিতে কিছু সংখ্যক রাজমিস্ত্রী নিয়ে একতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন যাহার নির্মান কাজ এখন পর্যন্ত চলমান। পরে নজরুল ইসলাম বিশ্বাস ও কামরুল ইসলাম বিশ্বাস দখলের কাজে বাধা দিতে গেলে অভিযুক্তরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম গং বিজ্ঞ আদালতের স্বারক নং ৩৩৩ ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা মতে ঝিনাইদহ সদর থানার এ.এস,আই(নিঃ) মোঃ শহীদুল্লাহ কায়সার আদালতের আদেশ মোতাবেক জমাজমিতে অবৈধ্যভাবে কাজ করা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও লিটন বিশ্বাস গংরা প্রভাব খাটিয়ে এবং থানা থেকে যথাযথ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় থানা পুলিশকে অগ্রাহ্য করে ভবন নির্মান কাজ করে চলেছেন। এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম বিশ্বাস ও কামরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘ওই জমির এস এ রেকর্ড, আর.এস রেকর্ডসহ জমির বৈধ্য দলিল পত্রাদি আমাদের নামে রয়েছে। এছাড়া জমির ভূমি উন্নয়ন করও নিয়মিত পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু প্রতারক,সন্ত্রাসী লিটন বিশ্বাস সেই জমিতে জোরপূর্বক দখল করে বিল্ডিং নির্মাণ করছে। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে থানাতে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লিটন বিশ্বাসের নেতৃত্বে ওই জমিতে ৮-১০ জন নির্মাণ শ্রমিক ভবন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসময় জানতে চাইলে অভিযুক্ত লিটন বিশ্বাস বলেন, ‘জমিটি আমাদের শরীকি জমি। আমার জমাজমি না থাকায় শরীকগন আমাকে এ জমি বসবাসের জন্য দিয়েছিল।আপোষ-বন্টন মতে শরীকরা আমাকে জমাজমি দেওয়ায় আমি এখন বাড়ি নিমার্ন করে ভোগ দখলে আছি, এখন এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’

নভেম্বর ০৯,২০২২ at ১৬:০৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস