বেশি দামে সার বিক্রিতে, সরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলতি রবি শস্যের মৌসুমে জমিতে ব্যাপকহারে সরিষার চাষের উদ্দ্যেগ নিয়েছে কৃষক। এ সময়ে সারের চাহিদা ব্যাপক। এ জন্য ইউরিয়া থেকে শুরু করে সব ধরণের সার কিনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা (বস্তা প্রতি) বেশি দাম দিয়ে। কৃষকরা বলছে সার,বীজ, হালচাষ সব মিলিয়ে এবার খরচ বেশি হচ্ছে। রবি শস্যের মৌসুমে জমিতে সার প্রয়োগের জন্য কৃষকের কাছে টিএমপি ,এমও পি , ইউরিয়া সার বেশি দামে বিক্রি করছে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা। দোকানে খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি সার ৫ থেকে ৭ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রবি শস্য চাষের মৌসুমে। ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানান যায় এ বৎসর ২ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:
‘গাধা জল ঘোলা করে খায়’ বিএনপির নির্বাচনে আসা নিয়ে তথ্যমন্ত্রী

এলাকার কৃষকরা এখন জমি তৈরি ও বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরিষার বীজ বপনের সময় টিএসপি, এমওপি, ও ইউরিয়া সার প্রযোগ করতে হয়। উপজেলায় বিসিআইসির ১১ টি নির্ধারিত ডিলার রয়েছে, আর জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় বিসিআইসির ১শত ৫০ জনের অধিক ডিলারের মাধ্যমে সার সরবরাহ করা হয়। পরে ডিলারদের কাছ থেকে সারের বস্তা কিনে খুচরা বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। সরকার প্রতিবস্তা ইউরিয়া ১১ শত (৫০কেজি) টিএসপি এক বস্তা ১১ শত টাকা (৫০কেজি), এমপিও বস্তা ৭৫০ শত টাকা (৫০কেজি) ডিএমপি ৮ শত টাকা নির্ধারণ করেছে। এ হিসাবে প্রতি কেজি টিএসপি,২২ টাকা,প্রতি কেজি এমওপি ১৫ টাকা , ইউরিয়া ২২ টাকায় বিক্রি করার কথা।

কিন্তু প্রতি টিএসপি ২৫ থেকে ২৭ টাকা এবং প্রতি কেজি এমওপি ২০ থেকে ২২ টাকা , ইউরিয়া প্রতিকেজি ২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ কৃষি বিভাগের কোন তদারকি না থাকায় সরকার নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে কৃষকদের কাছে। খুচরা বিক্রেতারা তাঁদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নিচ্ছে। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ ডিলার ছাড়া অন্য কোথাও সার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামেই সার কিনতে হচ্ছে। এতে করে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ভূঞাপুর উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা তাদের দোকানে লোক দেখানোর জন্য মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রেখেছেন্ কিন্তু সেই দামে সার বিক্রি করছেন না ।

তারা প্রতি কেজি টিএসপি ২৫থেকে ২৭ এমওপি ২০ থেকে ২৫ টাকা ইউরিয়া ২৫ টাকায় বিক্রি করছে। প্রতিবাদ করে কোন লাভ হচ্ছে না বরং শক্রতা সৃষ্টি হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। ভূঞাপুরের টেপিবাড়ীর কৃষক হুরমুজ আলী বলেন বর্তমানে সারের যে দাম সরকার নির্ধারণ করেছে তার চাইতে ডিলাররা বেশি দামে সার বিক্রি করছে । তার ভাষায় ডিলাররা বলেন প্রয়োজন হলে ওই দামে সার নেন,না হলে অন্য কোথাও দেখেন। উপজেলার বামন হাটা গ্রামের মোঃ মহি উদ্দিন খান জানান ৫ কেজি ইউরিয়া ১২০ টাকা (বস্তা ১২০০ টাকা) টিএসপি ৫ কেজি ১২০ টাকা (বস্তা ১২০০ টাকা) ক্রয় করেছেন। ভূঞাপুরে সার ডিলার মতিয়ার রহমান বলেন কৃষকদেরকে সার দিতে পারছি তাইতো ভালো। সারের বস্তা ছিঁড়া থাকে , সার বহনের সময় ঘরেও অনেক সার অপচর হয়।

বেশি দামের বিক্রির কথাটি শিকার করতে চাননি। উপজেলার ডিলাররা বেশি দামে সার বিক্রি করছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে কৃষকদের কাছ থেকে। পজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মোঃ হুমায়ন কবীর জানান প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে । উপজেলায় বিসিআইসির ১১ টি নির্ধারিত ডিলার রয়েছে, তাদের দোকানে দোকানে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখা নির্দেশনা রয়েছে। ক্রেতারা যখন সার ক্রয় করবেন তখন সঙ্গে রশিদ নিতে হবে ডিলাদের কাছ থেকে। কোন বিক্রেতা কৃষকদের কাছ থেকে দাম বেশি নিচ্ছে, তা কেউ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নভেম্বর ০৮,২০২২ at ১৭:৫৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর