পাঁচবিবিতে জামাতের গোপন খবর পুলিশে দেয়ার সন্দেহে, ছাত্রীকে নির্যাতন

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠকের খরব পুলিশের কে জানিয়ে দেওয়ার সন্দেহে এক কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঐ কলেজ ছাত্রী পাঁচবিবি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের নামা বাঁশখুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মামলা সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ১লা নভেম্বর রাতে উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের নামা বাঁশখুর গ্রামের মৃত আব্দুস ছালামের পুত্র সাইদুল ইসলামের বাড়ীতে জামায়াত-শিবিরের একটি গোপন বৈঠক চলছিল। উক্ত বৈঠকের খবরটি উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে রাতেই পাঁচবিবি থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়।

আরো পড়ুন:
ঘোড়াঘাটে ইউএনও হত্যাচেষ্টা, রবিউলের ১০ বছর কারাদণ্ড

এসময় পুলিশে উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় একই গ্রামের কুসুম্বা ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা আব্দুল হান্নান ও তার পুত্র ছাত্র শিবির নেতা আহসান হাবিবসহ শিবিরের সহকর্মীদের নিয়ে তাদের বাড়ী গিয়ে শাসাতে থাকে। বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে কলেজ ছাত্রীটিকে কিলঘুষি, টানা হেঁচড়াসহ শ্লীতাহানি করে। এসময় পরিবারের লোকজন এবং পাশের বাড়ীর লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের এ্যালোপাথারী মারপিট করে। শুধু তাই নয় ঐ ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট ও তার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।

এদিকে এবিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে ঐ কলেজ ছাত্রীকে শিবির নেতা আহসান হাবিব ও জনৈক অপর এক সাংবাদিক থানা চত্তরেও হুমকি দিতে থাকলে সেটি ঐ কলেজ ছাত্রী নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারন করলে তারা সেখানেও তাকে লাঞ্চিত করে। মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে ঐ গ্রামের শাহিন, কমলা দারাজ ও নাজমা বেগম বলেন, ১লা নভেম্বর সাইদুলের বাড়ীতে জামায়াত ও শিবিবেরর আলোচনা চলছিল। সেটি কে বা কারা পুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসা মাত্র তারা পালিয়ে যায়। সেই ঘটনায় পুলিকে খবর দেওয়ার বিষয়টি ঐ কলেজ ছাত্রীর উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে পরের দিন তাকে শারিরিক নির্যাতন ও লাঞ্চিত করে।

সাবেক স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল হোসেন বলেন,ছাত্র শিবির ও জামাতের লোকজন যখন কলেজ ছাত্রীর বাড়ীতে তান্ডব চালায় তখন সে আমাকে ফোন করলে আমি সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্র তারা আমাকেও মারধর ও আমার মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। সাইদুলের বাড়ীতে গিয়ে তাকে না পেয়ে সাইদুলের ছেলের স্ত্রী কুলছুম বেগম বলেন, আমাদের বাড়ীতে কোন জামায়াত শিবিরের মিটিং হয়না। তবে পুলিশ কেন এসেছিল এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ কেন এসেছিল তা আমি বলতে পারব না।

জামাত নেতা আব্দুল হান্নান ও তার ছেলে শিবির নেতা আহসান হাবিবের বাড়ীতে গিয়ে তাকে না পেয়ে আহসান হাবিরে ব্যক্তিগত মুটোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন ঐ বিষয়টি মিমাংসার জন্য এলাকাবাসী হিসাবে আমাকে উভয়পক্ষ ডাকে। বৈঠক চলাকালীন জোবাইল নামের এক ছেলের সঙ্গে ঐ কলেজ ছাত্রীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। আমি লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে সড়ে আসি। এবিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঔদিন সেখানে জামায়াতের কোন সাংগাঠনিক বৈঠক বসেনি, তবে শুনেছি উক্ত এলাকার স্থানীয় মসজিদ নিয়ে কয়েকজন আলোচনা করছিল। পাঁচবিবি থানার ওসি পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নভেম্বর ০৮,২০২২ at ১৭:১১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর