“শিশু পার্কে নির্মাণ সামগ্রী” খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আসাদুজ্জামান খান শিশুপার্কটি বছরের পর বছর ধরে দখল করে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বহুতল ভবন তৈরির কাজ করা হচ্ছে। শিক্ষক সমিতির পাশাপাশি আসাদুজ্জামান খান হাফিজিয়া মাদরাসা ও স্থানীয়রা পার্কের ভেতর ইট-রড, পাথর ও বালু রেখে বাসা-বাড়ির কাজ করছে। এতে পার্কে শিশুদের বিনোদন বন্ধ হয়ে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।

আরো পড়ুন:
দেলুটী ইউনিয়ন দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা কমিটির দ্বি-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশুপার্কের ভেতর মাটি, বালু, খোয়া, পাথর, রডসহ নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সকল মালামাল রাখা হয়েছে। এতে শিশুরা সেখানে খেলতে না পারায় পার্কের বিভিন্ন রাইডে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে আছে। শিশুদের বিনোেদনের কোনো সুযোগ নেই। জানা গেছে, অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খাঁর জায়গায় আসাদুজ্জামান নামে ভূঞাপুরে একমাত্র শিশুপার্কটি স্থাপন করা হয়। শিশুপার্কের পাশেই ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজ, আসাদুজ্জামান খান হাফেজিয়া মাদরাসা, ভূঞাপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি কোচিং সেন্টার ও কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।

ভূঞাপুরে শিশুদের জন্য কোনো বিনোদনকেন্দ্র বা পার্ক না থাকায় আসাদুজ্জামান শিশুপার্ক তাদের প্রধান বিনোদনের মাধ্যম। অথচ বহুতল ভবনের নামে বছরের পর বছর পার্কটিতে ইট, খোয়া, বালু, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রী রেখেছে শিক্ষক সমিতি। ফলে সেখানে শিশুরা খেলাধুলা করতে পারছে না। পৌরসভা কয়েক বছর আগে পার্কের সংস্কার কাজসহ রাইডগুলোর মেরামতের কাজ করে। কিন্তু পার্কটিকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় যে যার মতো ব্যবহার করছে। শিশুরা জানায়, তাদের খেলাধুলার কোনো জায়গা নেই। আগে শিশুপার্কে বন্ধুরা মিলে খেলাধুলা করত। কিন্তু পার্কটি দখল করে বালু, খোয়া, ইট, পাথর ও রড রাখা হয়েছে। পার্কে গেলে ভয় হয় যদি পড়ে গিয়ে আহত হয়। ফলে বাড়িতে বিনোদনের জন্য মোবাইল বা কম্পিউটারে বিভিন্ন গেম এবং ভিডিও দেখি।

অভিভাকরা জানান, ভূঞাপুরে শিশুদের জন্য কোনো বিনোদনকেন্দ্র নেই। পার্কটি শিশুদের মানসিক বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু পার্কটি অভিভাবকহীন হওয়ায় সেটি দখল হয়ে যাচ্ছে। পার্কের ভেতর নির্মাণের বিভিন্ন সামগ্রী রাখা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে শিক্ষক সমিতি তাদের বহুতল ভবন করছে পার্কে বিভিন্ন সামগ্রী রেখে। শিশুরা সেখানে খেলতে পারে না। এছাড়া পার্কে থাকা বিভিন্ন রাইডে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে আছে। শিশুরা সেখানে বিনোদনের পরিবর্তে আহত হচ্ছে। শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় তারা মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে। পার্কটি দ্রুত সচল করার দাবি জানান অভিভাবকরা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহুরুল ইসলাম পার্কের বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।ভূঞাপুর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ বলেন, পার্কটি এর আগে মেরামত করা হয়েছিল পৌরসভার বরাদ্দ থেকে। পার্কটিতে নির্মাণসামগ্রী রেখে দখল করা হয়েছে বলে শুনেছি। পার্কটি আধুনিকায়নের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। প্রকৌশলীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

নভেম্বর ০৬,২০২২ at ১৮:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর