ধর্মান্তরের আশ্বাস ও বিয়ের প্রলোভনে গৃহবধুকে ধর্ষণ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে সনাতন ধর্মের তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধুকে ধর্মান্তরিত করার আশ্বাসে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার এক পর্যায়ে ধর্ষককে স্থানীয়রা হাতে নাতে ধরে পুলিশে সোর্পদ করলে পুলিশ তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরে আসামী জেল থেকে জামিনে বের হয়ে এসে মামলা তুলে নিতে বাদীনিকে প্রাণ নাশসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে। ফলে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে গত ০৩/১১/২২ তারিখ বৃহস্প্রতিবার বাদীনি থানায় আবারো একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলার পৌর এলাকার দমদমা মহল্লায় এ ঘটনাটি ঘটে । থানায় লিখিত অভিযোগ ও বাদীনির ভিডিও বক্তব্যে জানায়, এঘটনার শুরুতে পৌর শহরের দমদমা মহল্লার প্রতিবেশী মোাফিজুর রহমান ওরফে লালু মন্ডলের বাড়ীতে টুকিটাকি কাজ করত উক্ত মহিলা। সেই সুবাধে গৃহকর্তার ছেলে রেজাউল করিম লিটু ওরফে লিটনের (৪৫ ) নিয়মিত কথাবার্তা হত।

আরো পড়ুন :
দুমকিতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত।

একদিন বাড়ীতে লিটনের স্ত্রী না থাকায় ঘরের বিছানা পত্র ঠিক করার কথা বলে তাকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে দরজা আটকিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে সে বিষয়টি লিটনের পিতাকে জানালে তিনি এটা কাউকে বলতে নিষেধ করেন। এদিকে সেই দিনের ঘটনাটি লিটন মহিলার স্বামীকে কৌশলে জানালে তার স্বামী তাকে ত্যাগ করে চলে যায়। স্বামী চলে যাওয়ায় তিনটি সন্তান নিয়ে দিন মজুর বাবার সংসারে অসায়ত্বের জীবন যাপন করতে থাকে। এর কিছুদিন পর বাদীনির এই অসহায়ত্বের সুয়োগ নিয়ে লিটন পূনরায় তার সাথে যোগাযোগ করতে থাকে এবং বিয়ের প্রলোভন দেয়। কিন্তু ধর্ম আলাদা হওয়ায় সে রাজী না হলে তাকে মুসলিম ধর্মে ধমান্তরিত করে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। শুধু তাই নয়, তার দুই মেয়ের বিয়ে ও তাদের ভরোণ পোষনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রলোভন দিয়ে দিনের পর দিন দৈহিক মেলামেশা করতে থাকে।

এভাবে দীর্ঘদিন চলার পর লিটনকে বিয়ের চাপ দিলে লিটন তালবাহনা করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে সে লিটনের সঙ্গে সর্ম্পক বন্ধ করে দেয় । এরপর গত ০৭/০৮/২০২২ ইং তারিখে গভীর রাতে লিটন উক্ত মহিলার ঘরে প্রবেশ করে আবারও জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে গেলে সে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে ধরে পুলিশে দেয়। সেই দিনই লিটনের নামে বাদীনি থানায় একটি অভিযোগ করলে পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এদিকে রেজাউল করিম লিটু ওরফে লিটন দেড় মাস হাজত পর জেল থেকে জামিনে বের হয়ে এসে গত ২২/১০/২০২২ইং তারিখে সন্ত্রাসীসহ মহিলার বাড়ীতে এসে তাকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে তাকে মেরে টুকরো টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিবে বলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়। ফলে নিরুপায় হয়ে সে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে গত ০৩/১১/২০২২ইং তারিখে পাঁচবিবি থানায় আবারও একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে রেজাউল করিম লিটুর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে বাদীর করা অভিযোগ সর্ম্পূণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে বিয়ের প্রলোভননে ধর্ষণের বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। আদালতেই এর ফয়সালা হবে। তবে রেজাউল করিমের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে সাজানো ঘটনায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে এবং বাদীর হুমকির অভিযোগটিও সম্পূণ মিথ্যা। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচবিবি থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমদিকে উক্ত মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসাবে দায়িত্বে ছিলাম। পরবর্তীতে মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য গত ৩০/০৯/২০২২ইং তারিখে ডিবিতে হস্থান্তর করা হয়েছে। এর পরবর্তীতে পুনরায় বাদী একটি অভিযোগ করেছেন, সেটি তদান্তাধীন রয়েছে।

নভেম্বর ০৫,২০২২ at ১৩:৫৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর