ঝিকরগাছার গঙ্গানন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনের বিস্তর অনিয়ম

ইউএনও’র কাছে ছয় মেম্বরের অভিযোগ। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ১নং গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বয়স্ক ভাতার কার্ড বিতরণে অনিয়ম, ট্যাক্স ও হোল্ডিং নং এর টাকার হিসাব না দেয়া, নিজ আত্মীয়দের মাঝে টিসিবি কার্ড, বিভিন্ন সরকারি অনুদান, সার ও বীজ বিতরণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন খোদ ইউপি সদস্যরা। বৃহস্পতিবার এমন অনিয়মের অভিযোগ এনে ছয়জন ইউপি ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগকারী মেম্বররা হলেন, ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য তানিয়া সুলতানা, ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম, ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আসাদুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:
কালীগঞ্জে জাতীয় সংবিধান দিবস পালিত

৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আশরাফুল, ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. তালিমুল ইসলাম এবং ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মহিদুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে ছয়জন জানান, তাদের না জানিয়ে চেয়ারম্যন বিভিন্ন কার্যক্রম নিজের ইচ্ছা মতো পরিচালনা করে, তারা অবহেলিত। অভিযোগের মোট ১১টি পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়, মাসিক মিটিং করতে চাইলে চেয়ারম্যান অকট্যভাষায় গালাগালি করে মিটিং করতে দেয় না। বয়স্ক ভাতার কার্ড বিতরণের কথা জানতে চাইলে তাদের জানানো হয় না। গোপনে চেয়ারম্যানের আত্মীয় স্বজনদের দেয়া হয়। ট্যাক্স ও হোল্ডিং নং এর টাকার হিসাব চাইলে কোন হিসাব দেবেনা বলে মেম্বরদের হুমকি চেয়ারম্যান। সরকারি সার ও বীজ বিনামূল্যে পরিষদে দিচ্ছে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করতে, কিন্তু চেয়ারম্যান সেই সকল মালামাল গোপনে তার নিজ আত্মীয় স্বজনদের বিতরণ করেন।

প্রতি গ্রামে একটি পন্ডে দেওয়া হয় টাকার বিনিময়ে, যা মেম্বরদের কে জানানো হয়নি। কোন প্রকল্প আসলে মেম্বরদের না জানিয়েই কার্যক্রম পরিচালনা করে চেয়ারম্যান। অভিযোগে আরো বলা হয় টিসিবি কার্ড আসলে সরাসরি চেয়ারম্যান তার নিজের লোকদের মাঝে বিতরণ করেন। এছাড়া ১০ টাকার চালের কার্ড যা প্রতিটি ওয়ার্ডের যে সকল লোকজন বিদেশে চলে গেছে বা মারা গেছে তাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান কার্ড নিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তাহার কোন সমাধান করেনি। ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন, তাদের কোন সমস্যা সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি তার সমাধান না করে গলিগালাজ করেন। সরকারি কোন অনুদান বন্টন না করে তার পছন্দের লোকদেরকে ইচ্ছা মতো বন্টন করে আমিন চেয়ারম্যান।

মেম্বররা সেসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে সে কোন কথার উত্তর দেয়না বরং মা-বোন তুলে গালিগালাজ করে।সরকারি যে সকল অনুদান আসে তার অর্ধেকটা চেয়ারম্যান নিয়ে নেয়। বাকী অর্ধেক মেম্বরগনদের মাঝে বন্টন করে সেখানে সে ভাগ বসায়। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিন জানান, গালাগালির বিষয়টা মিথ্যা, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আমি যাতে ঠিকমত ইউনিয়ন পরিষদ না চালাতে পারি সেজন্য একটা পক্ষ মেম্বরদের দিয়ে এসব করাচ্ছে। তদন্ত করলেই সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুল হক জানান, অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি। তবে অভিযোগে কি আছে এখনো দেখিনি। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নভেম্বর ০৪,২০২২ at ২০:০৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর