জাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিতর্কিত নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনঃবিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শাখায় যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলমের নিকট আবেদন জানিয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক নুহু আলম বিভাগীয় সভায় অস্থায়ী নিয়োগ নিয়ে আলোচনা না করে বিজ্ঞাপন প্রদান ও চূড়ান্ত নিয়োগের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরা অপমানিত ও মর্মাহত হন বলে জানিয়েছেন বিভাগের একাধিক শিক্ষক। এ প্রক্রিয়ায় বিভাগের অপ্রয়োজনীয় শাখায় এবং অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে আশংকা করছেন তারা।

আরো পড়ুন :
ইমরানকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

জানা যায়, গত বছরের ৩০ নভেম্বর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে দুই জন অস্থায়ী প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে সেখানে কোন ব্রাঞ্চ উল্লেখ না থাকায় গত ২ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির বিশেষ সভায় ব্রাঞ্চ উল্লেখপূর্বক পুনঃ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রশাসনের নিকট সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং বিভাগের পরবর্তী সাধারণ সভায় আলোচনার মাধ্যমে কোন ব্রাঞ্চে শিক্ষক নেয়া হবে সেটা চূড়ান্ত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক নুহু আলম বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বিভাগে আর কোন আলোচনা করেননি।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিভাগের ১১ জন শিক্ষক গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের নিকট উপস্থিত হয়ে তাদের আপত্তির বিষয়টি উপস্থাপন করেন। তবে পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রদান না করেই ইতোমধ্যে উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার সম্পন্ন হয়েছে হয়েছে। বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিভাগের নতুন সভাপতি দায়িত্ব গ্রহনের পর গত ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির বিশেষ সভার ২নং আলোচ্যসূচিতে উক্ত নিয়োগের জন্য গৃহিত পদক্ষেপসমূহ বাতিল করে এবং বিভাগীয় সভায় আলোচনা করে বিভাগের চাহিদার ভিত্তিতে ক্ষেত্র/ব্রাঞ্চ উল্ল্যেখ পূর্বক পুনঃবিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগটি সম্পন্ন করতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অনুরোধ করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এরই প্রেক্ষিতে, গত রবিবার (৩০ অক্টোবর) উপাচার্য মোঃ নূরুল আলম বরাবর উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের নবনিযুক্ত সভাপতি অধ্যাপক ছালেহ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক লিখিত অনুরোধ লিপি প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে বিভাগের সভাপতি ছালেহ আহাম্মদ বলেন, মাইকোলজি ও প্ল্যান্ট প্যাথলজি ব্রাঞ্চে ইতোমধ্যে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। মোট ১২ ব্রাঞ্চের ৭ টিতে ২ জন ও বাকি ৪ টিতে একজন করে শিক্ষক রয়েছেন। এমতাবস্থায়, মাইকোলজি ও প্ল্যান্ট প্যাথলজি ব্রাঞ্চে নতুন করে আরো দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া অযাচিত। তিনি আরো বলেন, বিশেষায়িত কোর্সের জন্য ওই ব্রাঞ্চ থেকে স্নাতককোত্তর, এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও ভালো মানের থিসিস সম্পন্নকারী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ফলাফলধারীকে ওই ব্রাঞ্চের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। এতে করে তারা শিক্ষার্থীদের ভালো মানের পাঠদান করতে পারে।

এভাবে অপরিকল্পিত নিয়োগ দিলে কোর্স বন্টনসহ ব্রাঞ্চের সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হবে। এটা কোনো ভাবেই একজন সচেতন শিক্ষক চান না। এব্যাপারে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক সভাপতি ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ নুহু আলম বলেন, নিয়োগমূলত হচ্ছে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে। চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে যেখানে উপাচার্যসহ নির্ধারিত ব্যাক্তিরা ও নিয়ম অনুযায়ী বিভাগের সভাপতি থাকেন। উপাচার্য বরাবর বর্তমান সভাপতি লিখিত অনুরোধ বা অভিযোগ দিতেই পারে এখানে অন্যায় কিছু নেই তবে অসত্য কিছু লিখে থাকলে সে সম্পর্কে আমি পদক্ষেপ নিতে পারবো। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক নিয়ম পালন করেই হয়েছে।

এ বিষয়ে জাবি উপাচার্য ড. মোঃ নূরুল আলমের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নভেম্বর ০৪,২০২২ at ১২:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/সর