বেড়ায় মধাবী শিক্ষার্থীর পাশে ইউএনও

পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. সবুর আলী বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া এক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. নাসিম আলী। তিনি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ভর্তি ফির টাকার অভাবে তাঁর ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। ইউএনও দরিদ্র এই শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি ও পড়ালেখার খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে তিনি নিজ কার্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী নাসিম আলীর হাতে এই টাকা তুলে দেন।

জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলার সেলন্দা গ্রামের দরিদ্র কৃষি শ্রমিক আলম হোসেনের ছেলে এবারের গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৬১.৫ নম্বর পেয়েছেন। এই নম্বরে তাঁর গুচ্ছভ‚ক্ত দেশের ২২টি বিশ^বিদ্যালয়ের সবগুলোতেই ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই তিনি গুচ্ছভ‚ক্ত কয়েকটি বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করেছেন। ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে দুই-একদিনের মধ্যেই মেধা তালিকা প্রকাশ করার কথা। নাসিমের ইচ্ছা জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় অথবা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়া।

আরো পড়ুন :
যশোরের শার্শায় ভ্যান চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

নাসিম ও তাঁর পরিবারের লোকজন জানান, প্রচুর অভাবের মধ্যে নাসিম এসএসসি ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এসএসসিতে তাঁর ৪.৭২ ও এইচএসসিতে ৫ জিপিএ ছিল। বিশ^বিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হলে ধারদেনা করে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। গুচ্ছভ‚ক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নিশ্চিত সুযোগ পাচ্ছেন জেনে ভর্তি ফির টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন নাসিম ও তাঁর পরিবার। শেষে বেড়ার ইউএনওর মহানুভবতার কথা জানতে পেরে তাঁর কাছে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফির টাকার জন্য আবেদন করেন। ইউএনও মোহা. সবুর আলী কয়েকদিন সময় চেয়ে নিয়ে ভর্তি ফির টাকাসহ পড়ালেখার খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করেন। বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টার দিকে নিজ কার্যালয়ে নাসিমের হাতে এই টাকা তুলে দেন ইউএনও। এ সময় নাসিমের বাবা আলম হোসেন, মা ওজিফা খাতুনসহ বেড়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও মোহা. সবুর আলী বলেন, ‘মেধাবী এই শিক্ষার্থীর শুধু ভর্তি ফি নয়, তাঁর বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ালেখার খরচের কিছুটা ব্যবস্থা করেছি। তার ভর্তিতে তার হাজার দশেক টাকা লাগবে। বাকি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তার বাব-মা বাড়িতে ছাগল বা গরু লালন-পালন করে যাতে বাড়তি উপার্জন করতে পারেন এবং উপার্জিত সেই টাকা যাতে নাসিমের পড়ালেখার খরচে ব্যয় করা হয় সেই পরামর্শই তাঁদের দিয়েছি।’ নাসিম বলেন, ‘ইউএনও স্যার শুধু ভর্তির টাকাই জোগাড় করে দেননি, পরবর্তীতে আমার পড়ালেখার খরচেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তা না হলে হয়তো আমার বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াই হত না। এ জন্য ইউএনও স্যারের প্রতি অসংখ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

নভেম্বর ০৩,২০২২ at ১৭:১৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/এমএইচ