আবারও অস্থিতিশীল কাঁচা বাজার “হতাশায় মধ্যবিত্ত -নিম্নবিত্তরা”

কাঁচা বাজারে শাঁক-সবজির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আয়ের খেঁটে খাওয়া মানুষগুলো। অভাব ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে আজকের জনজীবন অতিষ্ঠ। নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তরা দুঃখ-কষ্টে চারিদিকে করছে হাহাকার । দ্রব্যমূল্য মানুষের ওপর চেপে বসেছে জগদ্দল পাথরের মত। জীবনধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের অগ্নিমূল্য বাজারে।

আরো পুড়ুন:
চৌগাছায় ভালো কাজের শর্তে দুই ইভটিজারকে মুচলেকায় মুক্তি

বেগুন, আলু, মূলা, বটবডি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লাউশাঁক, পুঁইশাক, লালশাক,করলা,প্রভুতির কাঁচা তরকারি মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় খেঁটে খাওয়া মানুষগুলো দিশে হারা হয়ে পড়েছে। এ সময়ে কাঁচা সবজি বাজারে উঠার কথা থাকলের বাজারে মিলছে না সেরকম। অন্যদিকে জীবন ধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের দামও আকাশ চুম্বী। চাল,ডাল,মাছ,মাংস, তেল চিনি , লবন,আটা, ডিম,পেঁয়াজ,রসুন,সোলাবুটসহ দ্রব্যের মূল্য আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন। ফলে সংসারের চাহিদা মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষ।

একদিকে এই সময়ে কর্মহীন মানুষ অন্যদিকে এ এলাকায় সময়-অসময় বন্যা, বৃষ্টি সবজি ফসলে ব্যাপক ক্ষতি। সব মিলিয়ে কাঁচাবাজারের লাগামহীন মূল্যে নিম্নবিত্ত আর মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত। সবজি কেনা এখন দুরহ ব্যাপার। তাই একবেলার সবজি দিয়ে তিন বেলা চলার চেষ্টা করে যাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। বর্তমানে প্রতিটি সবজি কেজিপ্রতি তিন থেকে চার গুণ দামে কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাজারে দ্রব্যমূল্যে আগুনে উভয় সংকটে পড়েছে এলাকার মানুষগুলো। দিন দিন খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বাড়ছে হতাশা।

ফলে নাভিশ্বাস ওঠা ক্রেতারা বাধ্য হয়ে বাড়তি দামেই বাজার সেরে ফিরছেন ঘরে। কোনো রকমে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। একের পর এক দাম বেড়ে চলছে সব জিনিষের। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বিক্রেতারা দেখাচ্ছে নানা অজুহাত দ্রব্যমূল্যর বৃদ্ধির কারণ হিসাবে। সরেজমিনে বুধবার সকালে ভূঞাপুরে বাজার ঘুরে দেখা যায় বেগুন গোলটা ১০০ টাকা, বেগুন লম্বা ৬০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ কেজি, যমুনার মাছ ১০০০-১২০০ টাকা কেজি, পুকুরে মাছ ৫০০-৭০০ টাকা প্রকার ভেদে, বিলের মাছ ৭০০ -১০০০ টাকা কেজি, পাপদা মাছ ৪০০-৫০০ টাকা কেজি, মূলা তাড়ি ১৫-২০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি, ইলিশ বড় ২০০০-২২০০ টাকা কেজি সয়াবিন তেল বোতলজাত ২০৫ টাকা, বটভটি ৬০ টাকা কেজি, পুইশাক ৫০ টাকা কেজি।

সকালে বাজার করতে আসার আব্দুল হাই জানান শাঁক-সবজির ক্রয় করতে আয়ের অধিকাংশ টাকা খরচ করতে হয । তাছাড়া সংসারে আরো অন্যান্য খরচ আছে । এভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মাঝে মাঝে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। মাছ কিনতে গিয়ে বাজার ঘুরে ফিরে এলাম । আরেক ক্রেতা আবু তালেব বলেন আমি কৃষি কাজ করে সংসার চালাই । আমার শাঁক-সবজি বাদে অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হয়।

আমার স্বল্প আয়ের সংসারে খুব কষ্ট করেই চালাতে হচ্ছে সংসার। প্রতিনিয়ত জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় হতাশা নিয়ে চাহিদার চাইতে কম বাজার করে ঘরে ফিরছেন বলে জানান তিনি। বাজারে কাঁচা সবজি বিক্রেতা আকবর বলেন, আমরা পাইকারি কিনে এনে পাবলিকের কাছে বিক্রি করি । আমাদের কেনা দাম বেশি পরে, বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে। সবজি বিক্রেতা শামীম,ফারুক একই রকম কথা বলেন । তবে বাজার তদারকি না থাকায় এমন হচ্ছে মনে করেন ক্রেতারা।

নভেম্বর ০২, ২০২২ at ১৮:২৯:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/জস