সুজানগর সরকারি মডেল স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রয়াত আহমদ আলীর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

পাবনা সুজানগর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রয়াত আহমদ আলীর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে সুজানগর নিজ বাড়িতে পারিবারিক ভাবে কুরআন খানি, দোয়া মাহফিল ও কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করা হয়।

পরে বিকেলে প্রয়াত আহমদ আলী’র বড় ছেলে আখতারুজ্জামান জর্জ এর তত্ত্বাবধানে শহরে তার বাড়িতে দোয়া, মিলাদ ও খাবার পরিবেশন করেন। প্রয়াত আহমদ আলী মাস্টার জন্ম গ্রহণ করেন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার মানিকদির গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে।

তিনি প্রথম শিক্ষকতা জীবনে সুজানগর উপজেলার রাইশিমুল গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার কর্মজীবনের শুভ সূচনা হয়।রাই শিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছুদিন চাকরি করার পরে সুজানগর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। দুই বছর চাকরি করার পরে ভাষা শহীদ আব্দুস সাত্তার পাবনা সদর উপজেলা ভাউডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।

আরো পড়ুন :
কালীগঞ্জে শিক্ষক অসিমকাণ্ডে দায়সারা তদন্ত কমিটি!

আবার তিনি কিছু দিন চাকুরী করার পর সুজানগর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও বহুমাত্রিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন তিনি। সুজানগর উপজেলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের এক পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি।তার জ্ঞানের আলোয় আলোকিত বহু ছাত্র-ছাত্রী রাষ্ট্রের উচ্চপদে আজ অধিষ্ঠিত হয়েছেন। সচিব পদে, পুলিশ সুপারপদে রয়েছেন।অত্যন্ত সহজ সরল উদার মনের মানুষ ছিলেন তিনি।

আজ সুজানগর উপজেলার অনেক রাজনীতিবিদই তার ছাত্র। পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবকে তিনি অত্যান্ত ভালোবাসতেন। প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদেরকে তিনি টিম ওয়ার্ক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দিতেন।তিনি সততা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দিতেন তার জীবনে। শিক্ষক মানে জীবনের পথ প্রদর্শক। সত্যিকার অর্থেই তিনি একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। পাবনা জেলায় দুইবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। জীবনের প্রতিটি বিষয়কেই তিনি গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। অর্থ-সম্পদ কে তিনি যেভাবে মূল্যায়ন করতেন জীবনে টাকার প্রয়োজন আছে, তবে লোক ঠকিয়ে প্রাসাদ গড়ার প্রয়োজন নেই। সুস্থ শরীর ও কাজে আনন্দ থাকা চাই।

যুগ যন্ত্রণা সম্পকে তিনি বলেছেন ৫০ বা ১০০ বছরে একজন মহা মানবের আবির্ভাব ঘটে থাকে এর সমাধান তিনিই করবেন ভয়ের কিছু নাই। তুমি সৎ থাকো সৃষ্টিকর্তা তোমাকে পথ দেখাবেন। একটি জলন্ত মোমবাতি হাজারো মোমবাতিকে জ্বালাতে পারে কিন্তু নিভন্ত মোমবাতি একটি ও জ্বালাতে পারে না। মৃত্যুকে তিনি এভাবে মূল্যায়ন করেছেন আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন মানুষের সেবা করার জন্য, তিনিই আবার সবাইকে ফিরিয়ে নেন

। তিনি একজন মানসিক ভাবে শক্তিশালী মানুষ ছিলেন। মৃত্যু কালে স্ত্রী, ৪ পুএ, ৪ কন্যা ও বহু আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার বড় পুএ মো. আখতারুজ্জামান জর্জ সিনিয়র শিক্ষক মুথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা, রাজশাহী বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাসহ নানা সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে রয়েছেন। আরেক পুত্র মো. হেদায়েতুল হক ঢাকায় সাহিত্য-সাময়িকী নিয়ে ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। আরেক পুএ মো. শরিফুল ইসলাম সাতবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তার ছোট ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম পাবনায় একটি কম্পানিতে চাকুরী করছেন। ৬ ই অক্টোবর ২০২২ তার ২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী ছিল। মৃত্যু বার্ষিকীতে সকলের কাছে তার জন্য দোয়া ও আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

অক্টোবর০৬,২০২২ at ২১:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক /মিনর/শই