ছয় বছর পর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন : নেতৃত্বে পুরনো না নতুন মুখ!

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন প্রায় ছয় বছর পর আগামী ২৩ অক্টোবর ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে (পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠ) অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হলেও নেতৃত্বে দুই দশকের পুরনো মুখ থাকছে, না নতুন মুখ আসবে? এ নিয়ে চায়ের টেবিলে আলোচনার ঝড় বইছে। সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে পাওয়ার চেষ্টা করছেন জেলা নেতারা।

জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্র্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। সংগঠনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটের কোনো কর্মসূচি না থাকায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর আগে আরেক

অনুষ্ঠানে মির্জা আজম ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় করার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় আগামী সম্মেলনে নেতৃত্বে ফের বেনজীর-মাহাবুব জুটিই থাকছেন, না নতুন তরুণ মুখ আসছে- এ নিয়ে পাঁচ উপজেলার নেতাকর্মীদের প্রবল আগ্রহ রয়েছে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। নেতাকর্মীদের দাবি, কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করার।

এদিকে, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের আগামীর সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি, সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুর রহমান, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর নাম আলোচনায় রয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও মাসুদ চৌধুরী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা হালিমা আক্তার লাবণ্য এবং কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের নাম আলোচনায় রয়েছে।

তবে, নসরুল হামিদ বিপু সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় তার অনুসারী শাহীন আহমেদ জেলায় সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন না বলে তার ঘনিষ্ঠরা দাবি করেছেন। অবশ্য, বেনজীর ও মাহাবুবের ঘনিষ্ঠরা বলছেন শেখ হাসিনা বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেই পুনরায় দায়িত্ব দেবেন। এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে বেনজীর আহমেদকে সাংগঠনিক পদোন্নতি দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিলে তখন মাহাবুবুর রহমান জুটি ভেঙে সভাপতি হতে চান। অন্যথায় তিনি সাধারণ সম্পাদকই থাকতে চান।

একটি সূত্রের দাবি, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কার কার নাম আলোচনায় আছে এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার একজন উপদেষ্টা কথা বলেছেন। ওই উপদেষ্টা বিদেশ যাওয়ার আগে তার অনুসারীদের এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর সাভার অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে বেনজীর আহমেদকে সভাপতি ও মাহাবুবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তারা টানা দুই টার্ম সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তারা নির্দিষ্ট মেয়াদের বাইরে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করলেও সাংগঠনিক কোনো কর্মসূচিতে ছিল না ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ। যদিও জেলা নেতারা এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

ref: bhorerkagoj