জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী হবে

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন চলমান এসএসসি পরীক্ষার গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, রসায়ন, কৃষি, জীববিজ্ঞান ও পদার্থ বিজ্ঞানের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ থাকলেও চার বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী শেষে হওয়ায় এ দুটি পরীক্ষার তারিখ স্থগিত না করে শুধু প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা অফিস।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষার ছয় বিষয়ের প্রশ্ন উদ্ধারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা বোর্ড। প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানসহ তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্ন ফাঁসের ‘গুজব’ ওঠায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মার নজরে আনেন। এরপর পরীক্ষা শেষে তারা কেন্দ্রসচিব ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের কক্ষে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রথমে তিনি (প্রধান শিক্ষক) সদুত্তর দিতে না পারলেও পরে অধিকতর জিজ্ঞাসায় তিনি স্বীকার করেন যে তার কাছে পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন রয়েছে। পরে তিনি সবার উপস্থিতিতে তার রুমের বুকসেলফ থেকে কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বের করে দেন।
মামলার বাদী ও ওই কেন্দ্রের ট্যাগ কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করেন, ব্যাগের ভেতর থেকে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, রসায়ন, কৃষি, জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশপত্রের প্যাকেট বের করা হয়। এরমধ্যে একটি প্যাকেট ছাড়া বাকি সব প্যাকেটের মুখ খোলা ছিল। তখন ট্যাগ কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাঈদ মো. আতিক নুর উল্লিখিত বিষয়ের প্রশ্নপত্র জব্দ করে কেন্দ্রসচিবকে হেফাজতে নেন।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান শিক্ষক জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আবু হানিফের সহায়তার কৌশলে পূর্বের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের মধ্যে তারা জব্দকৃত প্রশ্নপত্রগুলো নিয়ে আসেন। এরপর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক জোবায়ের হোসেন ও অফিস সহকারী আবু হানিফসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের সহযোগিতায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন।
প্রশ্নফাঁসের খবর পেয়ে ভূরুঙ্গামারী ছুটে যান দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. কামরুল ইসলাম, সচিব প্রফেসর মো. জহির উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের সত্যতা পান। তবে ছয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র উদ্ধার এবং তার মধ্যে পাঁচ বিষয়ের প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের মুখ খোলা থাকলেও বুধবার সকালে চার বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা বোর্ড।
এ ব্যাপারে জানতে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর মো. জহির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমাদের চেয়ারম্যান দেখছেন। আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
এজাহারে উল্লিখিত বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. কামরুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমরা চারটি বিষয়ে পরীক্ষা স্থগিত করেছি। এগুলো সবই আমরা দেখছি। আমরা সবকিছু বিবেচনা করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামসুল আলম বলেন, বোর্ড চেয়ারম্যান চার বিষয়ে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞানের পরীক্ষা রুটিনের শেষে থাকায় রুটিন পরিবর্তন করা হয়নি। তবে প্রশ্ন পরিবর্তন করা হবে। ইতোমধ্যে এ দুটি পরীক্ষা প্রশ্ন ঢাকায় প্রিন্ট হচ্ছে। অন্য চার বিষয়ের পরীক্ষা পরপর থাকায় সেগুলো স্থগিত হয়েছে।

সেপ্টেম্বর ২২,২০২২ at ১২:০৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /নয় /শই