মিতু হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায় বিচারসহ স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

চট্টগ্রামে আলোচিত মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলার বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত, দেশপ্রেমিক, সৎ ও সাহসী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে স্ত্রী হত্যার সাজানো মামলায় পিবিআই হেফাজতে বর্বরোচিত নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং তার মুক্তি ও চাকরি পুনর্বহালের দাবীতে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বিকালে উপজেলার হাটফাজিলপুর বাজারে এলাকাবাসী এই মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে। এ মানববন্ধনে এলাকার শত শত নারী পুরুষ স্বতস্ফ’র্তভাবে ব্যানার প্লাকার্ড নিয়ে অংশ নেয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,আবাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য আমজাদ হোসেন মোল্যা, বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস, বাবুল আক্তারে বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া প্রমুখ। এছাড়া শামীম আহমেদ, ইকতিয়ার হোসেন, আশিকুর রহমান কাজল বক্তব্য রাখেন।

আরো পড়ুন :
পাঁচবিবিতে বুপ্রেনরফিন ইঞ্জেকশনসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

এসময় বক্তারা বলেন,দেশ সেরা পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার কেবল ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান না,তিনি পুলিশ বাহীনির গর্ব, বাংলাদেশের সম্পদ। জীবন বাজি রেখে তিনি দেশের জন্য শ্বাসরুদ্ধকর সব অভিযান চালিয়েছেন। তার কারণে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়তে থাকে।

অপরাধীদের দমনে তার একের পর এক সাফল্যে পুলিশের অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার ঘুম হারাম হয়ে যায়। বিভাগের মধ্যে অনেকের শত্রুতে পরিণত হন তিনি। ২০১৬ সালে ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেটে স্বর্ণের গুদামে অভিযান চালানোর সময় ২কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয় বাবুল আক্তারকে।

এ অনৈতিক প্রস্তাবে তিনি রাজি না হওয়ায় বাবুল আক্তারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তৎকালীন সিএমপির উপ-কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার। এঘটনার পর বনজ কুমারকে ঢাকায় বদলি করা হয়। এরপর থেকে শুরু হয় এসপি বাবুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র।

দুই দফায় তার উপর হামলা চালানো হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে ২০১৬ সালে ৫ জুন চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। স্ত্রী খুনের ঘটনায় তিনি যখন শোকে কাতর তখন ওই বছরের ২৪ জুন তাকে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুর বাড়ী থেকে উঠিয়ে ডিবি অফিসে নিয়ে ১৫ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ সময় তার জোরপূর্বক চাকরির অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়। এরপর থেকে চলতে থাকে ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্রের নীলনকশা হিসেবে ২০২১ সালের ১০ মে বাবুল আক্তারকে পিবিআই চট্টগ্রামের খুলশী কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বেআইনিভাবে ৫৩ ঘন্টা আটকে বর্বরোচিত নির্যাতন করা হয়অ ভারতীয় নারী গায়ত্রী অমর সেনের সাাতে তথাকথিত পরকীয়ার আষাঁড়ে সাজানে গল্প বলা হহয় মিডিয়ার কাছে।

এর দুইদিন পর ১২ মে তার শ^শুর মোশাররফ হোসেনকে পিবিআইয়ের গাড়ীতে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে স্ত্রী মিতু হত্যার সাজানো মামলা করা হয়। এ মামলায় পাঁচদিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। টানা ৫দিন চোখ বেধে ও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে জোরপর্বূক ১৬৪ ধারায় জবানবিন্দ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

এছাড়া মিডয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বাবুলের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়। বক্তারা আরো বলেন, আমরা পুলিশ হেফাজতে তার উপর চালানো বর্বরোচিত এসকল নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান।

বিনাবিচারে ১৭ মাস ধরে কারাগারে বন্দি সৎ পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে অবিলম্বে মুক্তির দাবী জানান এলাকাবাসী।

পাশাপাশি তার স্ত্রী হত্যা মামলা পিবিআইয়ের পরিবর্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে, অবৈধভাবে পিবিআই কার্যালয়ে ৫৩ ঘন্টা আটক ও ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারনে বনজ কুমারসহ অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা,

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষ আদায় ও মিডিয়া ট্রায়েলের মাধ্যমে বাবুল আক্তারকে অন্যায় ভাবে ফাঁসানোর অপরাধে বনজ কুমারকে শাস্তি দাবী জানিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। একই সাথে কারাগারে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা ও হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি তার পরিবারের নিরাপত্তা চান এলাকাবাসী।

সেপ্টেম্বর ১২,২০২২ at ১৯:২৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /মজ /শই