বিআইডব্লিউটিএ টঙ্গী ইকোপার্ক ও নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস এর শুভ উদ্বোধন

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিআইডব্লিউটিএ টঙ্গী ইকোপার্ক এবং টঙ্গী নদী বন্দর হতে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিআইডব্লিউটিএ টঙ্গী ইকোপার্ক এবং টঙ্গী নদী বন্দর হতে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস এর শুভ উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব জাহিদ আহসান রাসেল ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শফিউল আজম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বিপিএম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ও গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মশিউর রহমান সরকার বাবু, কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী হাসান উদ্দিন, যুবলীগ নেতা আক্তার সরকার ও ফয়েজ আহমেদ রাজু প্রমুখ।

আরো পড়ুন :
ভোলার কৃতিসন্তান রফিকুল ইসলাম কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবকদলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

এসময় বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে ঢাকা শহরের চারিদিকে নৌপথ উন্নয়ন, সংরক্ষণ সৌন্দর্যবর্ধন ও চালুকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি দ্রুতগামী স্পীডবোট দিয়ে শনিবার টঙ্গী নদী বন্দর হতে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পীডবোট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

বেসরকারী উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর-কড্ডা এবং টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর (গাজীপুর)-উলুখুল (কালীগঞ্জ) এ দু’টি রুটে স্পীডবোট চলাচল করবে। টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর-কড্ডা ভাড়া ১৫০ টাকা; সময় লাগবে ২৫ মিনিট এবং টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর (গাজীপুর)-উলুখলা (কালীগঞ্জ) ভাড়া ১২০ টাকা; সময় লাগবে ১৯ মিনিট।

পর্যায়ক্রমে যাত্রী চাহিদার আলোকে কড্ডা-গাবতলী এবং গাবতলী-সদরঘাট এ দু’টি নৌরুটে স্পীডবোট চালু করা হবে। উল্লেখ্য, ঢাকা শহরের চারিদিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করে সড়কপথে যানবাহনের চাপ কমানো এবং নৌপথে সাশ্রয়ীমূল্যে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে কয়েকটি ধাপে ঢাকার চারটি নদীর ১১০ কিলোমিটারে নৌপথে নৌযান পরিচালনার পদক্ষেপ নেয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক বৃত্তাকার নৌপথের নদী খননসহ নয়টি ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণের মাধ্যমে নৌপথটি চালু করা হয়। বর্তমানে উক্ত নৌপথে মালামাল পরিবহন ব্যবস্থায় গুরুত্ব পেলেও লো-হাইটের ব্রীজ, অতিরিক্ত সময় এবং যাত্রীবান্ধব পরিবেশের অভাবে সাশ্রয়ীমূল্যে পরিবহন ব্যবস্থা যাত্রীবান্ধব করা সম্ভব হয়নি।

পরবর্তী সময়ে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃক ওয়াটার বাস চালু করা হলেও বিভিন্ন কারণে তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে টঙ্গী নদীবন্দর হতে বৃত্তাকার নৌপথে যাত্রী চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুতগামী স্পীডবোট-চালুর পদক্ষেপ নেয়া হয়। তাছাড়া যাত্রী চাহিদার আলোকে ঢাকা শহরের বৃত্তাকার নৌপথে নতুন নৌপথ সৃষ্টি করে দ্রুতগামী স্পীডবোট চালুর আরো পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ঢাকার বৃত্তাকার নৌপথে স্পীডবোট চালু হলে উক্ত এলাকার জনগণ যানজটমুক্ত ও সাশ্রয়ীমূল্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে এবং সড়ক পথে যানবাহনের চাপ কমাতে সহায়তা করবে। টঙ্গী ইকোপার্ক উদ্বোধন ১১ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে টঙ্গী ইকোপার্ক নির্মাণ কাজ ৮ নভেম্বর ২০২০ শুরু হয়ে ১৫ এপ্রিল ২০২২ সম্পন্ন হয়েছে।

টঙ্গী নদী বন্দর এলাকায় ৩,০ একর অধিগ্রহণকৃত ভূমির মধ্যে ২.৫ একর ভূমিতে ইকোপার্কটি নির্মিত হয়। ইকোপার্কটি নির্মাণের ফলে অত্র এলাকার সর্বস্তরের জনগণের কাঙ্খিত বিনোদনসহ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে পরিবার পরিজন নিয়ে অবসর সময় কাটাতে সহায়তা করবে। তাছাড়া নদীর তীরভূমি দখলরোধ করে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। ইকোপার্কে ফলজ, বনজ ও ঔষধিসহ প্রায় দশ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।

যা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। এখানে পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি ওয়াচ টাওয়ার, ছয়টি চাইল্ড রাইড ও একটি ঝরনা রয়েছে। বৃত্তাকার ১১০ কিলোমিটার নৌপথের বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার, ওয়াকওয়ে, জেটি, ইকোপার্কসহ আনুষঙ্গিক কাজের প্রকল্পের আওতায় দৃষ্টিনন্দন টঙ্গী ইকোপার্কটি নির্মিত হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় অপর দু’টি ইকোপার্ক বড়বাজার (গাবতলী) এবং হাজীগঞ্জ ফেরীঘাট (নারায়ণগঞ্জ) এলাকায় এবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক সম্পূর্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাল ২০১৮ হতে জুন ২০২৩ পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১,১৮১ কোটি ১০ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা।

সেপ্টেম্বর ১০,২০২২ at ১৭:৪৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /রব /শই