চৌগাছায় ট্রাফিক পুলিশ ও সাধারণ জনতা হাতাহাতি থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে শান্ত

চৌগাছায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে সাধারণ জনতার তুলকালাম ঘটনা ঘটেছে। সোমাবর দুপুরে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে মহিলা কলেজের সামনের সড়কে মটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা করার সময় এই ঘটনা ঘটে। পরে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা মোঃ মাসুমের নেতৃত্বে সোমবার সকাল থেকেই চৌগাছা বাজারের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে নম্বর বিহীন মটরসাইকেল জব্দ করার পাশাপাশি মামলা করতে থাকেন।

দুপুরের দিকে মহিলা কলেজের সামনে তারা অনুরুপ ভাবে মটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা করতে থাকেন। এসময় চৌগাছা বাজারের দিক থেকে আসা পৌর এলাকার জৈনক এক প্রবাসী সেখানে মটরসাইকেল যোগে গেলে তার গতিরোধ করেন ট্রাফিক পুলিশ।

আরো পড়ুন :
‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন রাবির ১৬ শিক্ষার্থী

এসময় কাগজপত্র দেখতে চাইলে ওই ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন পরে এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছি, আগামী কাল (আজ) পুনরায় চলে যাবো। একটি জরুরী কাজে বাজারে এসেছি, বাসা হতে হতে বাজার নিকটে তাই হেলমেট আনা হয়নি। তারপরও ট্রাফিক হেলমেট ব্যবহার না করার অপরাধে একটি মামলা দেয়।

এনিয়ে ওই প্রবাসীর সাথে ট্রাফিক পুলিশের কথা কাটাকাটি শুরু হয় একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। স্থানীয় জনতা ও পথচারীরাও এসময় ট্রাফিক পুলিশের উপর চড়াও হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রাফিক পুলিশ চৌগাছা থানাকে খবর দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

পথচারী বিল্লাল হোসেন মোহাম্মদ আলী, শিমুল হাসান, রহতম উল্লাহ, মিজানুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, জনতা ও ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনার জন্য দায়িত্বরত ওই ট্রাফিক পুলিশই দায়ি। কেননা যে ছেলেটিকে তারা ধরেছে, সে অনেক অনুনয় বিনয় করেছে, এমনকি আগামী কাল অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার তার বিদেশে যাওয়ার দিন ধার্য্য রয়েছে।

এতো কিছু বলার পরও ট্রাফিক অহেতুক একটি মামলা দেয়। মুলত এই ঘটনায় ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় ও পথচারীরা ট্রাফিকের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং ধাক্কা ধাক্কি শুরু হয়।

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা মোঃ মাসুম বলেন, ছেলেটিকে থামতে বলতে সে মটরসাইকল থামায় ঠিকই, কাগজপত্র দেখতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তার সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলে। পরে থানা পুলিশ এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চৌগাছা থানার ওসি তদন্ত ইয়াছিন আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং পরিস্থিতি শান্ত করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি বলে তিনি জানান।

এদিকে একধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চৌগাছাতে ট্রাফিক পুলিশ ধারাবহিক ভাবে নম্বর বিহীন মটরসাইকেল জব্দ ও মামলা দিয়ে যাচ্ছেন। একারণে অনেক মটরসাইকেলের কাগজপত্রও হয়েছে। কিন্তু গত দুই মাস ধরে সেই অভিযান ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেছে। সপ্তাহে তিন চার দিন তারা অভিযানে আসছে।

এতে করে বাজার মুখো মানুষের উপস্থিতি আশংকাজনক ভাবে কমে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে সব ধরনের ব্যবসায়। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেও কোন ফল পাইনি বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মটরসাইকেল মালিক বলেন, আগে কোন কাগজপত্র ছিলো না, ট্রাফিকের কাছে ধরা খেয়ে কাগজপত্র করতে দিয়েছি এমনকি ড্রাইভিং লাইসেন্সও করতে দিয়েছি, সেই সমস্ত কাগজ নিয়ে সড়কে আসলে ট্রাফিক মামলা দিয়ে দিচ্ছে।

এতে করে মটর বাইকের মালিকসহ সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে, মানুষের মাঝে জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সোমবার ঘটেছে বলে তারা মনে করছেন।

বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারনে মানুষ যখন দিশেহারা সংসার চালাতে রীতিমত হিমশীম খাচ্ছে তখর মটরসাইকেলের মামলা খেয়ে তার পিছনে হাজার হাজার টাকা ব্যয় একটি বাড়তি বোঝা, তাই পরিস্থিতি বুঝে অভিযান পরিচালনা করার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীসহ উপজেলার সচেতন মহল।

সেপ্টেম্বর ০৫,২০২২ at ১৮:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /মদ /শই