ভাঙ্গাজাঙ্গাল খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

নওগাঁর আত্রাইয়ের সমসপাড়া-ভাঙ্গাজাঙ্গাল খেয়াঘাটে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি এক টাকার টোল সাত টাকা এবং খালি রিক্সা/ভ্যান প্রতিটি দুই টাকার স্থলে ১৫টাকা আদায় করার অভিযোগ ওঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে।

ঘাটে টোল চার্ট না ঝুলিয়ে ইচ্ছে মতো আদায় করছেন ইজারাদার। ফলে প্রতিদিন নদী পারা-পারে যাত্রীরা অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছেন। ইজারাদার বলছেন, সরকার নির্ধারিত কয় টাকা টোল রয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে আগের ইজারাদার যেভাবে আদায় করেছেন আমিও সেভাবে আদায় করছি।

আত্রাই উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার দপ্তর সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার আত্রাই-সিংড়া নদীর সমস পাড়া-ভাঙ্গাজাঙ্গাল খেয়া ঘাট চলতি বাংলা সনে এক বছরের জন্য ৮ লক্ষ ৫৭হাজার ৫০১টাকায় ইজারা হয়েছে। ঘাট পারা-পারে সরকার নির্ধারিত টোল অনুযায়ী প্রতিপারে প্রতিজন এক টাকা,

আরো পড়ুন :
স্থানীয় বাজারে ধানের দর বেশি চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা কাছা-কাছি পৌছলেও ধানে চরম ব্যহত!

প্রতিটি মটরসাইকেল তিন টাকা, খালি টমটম প্রতিটি পাঁচ টাকা, বাইসাইকেল প্রতিটি আরোহিসহ দুই টাকা, খালি রিক্সা/ভ্যান প্রতিটি মালামালসহ তিন টাকা এবং খালি রিক্সা/ভ্যান প্রতিটি দুই টাকা, ছাগল/ভেড়া প্রতিটি এক টাকা এবং সকল প্রকার মালামাল প্রতিমন এক টাকা টোল রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এপর্যন্ত ঘাটে এপার থেকে ওপারে একবার পার হলে ইজারাদার প্রতিজন পাঁচ টাকা,

প্রতি মটরসাইকেল পাঁচ টাকা, রিক্সা/ভ্যান প্রতিটি ১০ টাকা টোল আদায় করছিলেন, কিন্তু জালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে জনপ্রতি আরো দুই টাকা বৃদ্ধি করে এখন সাত টাকা , রিক্সা/ভ্যান ১০টাকা থেকে ১৫টাকা করে আদায় করছেন। নদীর ঘাটে পারা-পারে অপেক্ষারত সুসিল চন্দ্র, জান্নাতুন বিবি, আলেফ হোসেনসহ বেশ কিছু যাত্রীরা বলেন, এলাকার মধ্যে সবচাইতে বড় হাট হচ্ছে সমস পাড়া হাট। এই হাটেই ধান, চাল, গম, ভূট্রাসহ বিভিন্ন কৃষি উৎপাদিত মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করা হয়।

এছাড়া এই হাটেই ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও সংস্থা রয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে প্রতিদিন নদীর দক্ষিন পারের লোকজনকে প্রায় তিন চার বার করে যাওয়া আসা করতে হয়। এতে একেক জন মানুষকে শুধু পারা-পারের টোল দিতে হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

এছাড়া নদীর দক্ষিন বাঁধ দিয়ে আত্রাই থেকে নাটোরের সিংড়া পর্যন্ত পাকা রাস্তা বয়ে যাওয়ায় উত্তর পারের লোকজনকেও দক্ষিন পারে যেতে হয়। এতে শুধু নৌকায় নদী পারা-পারেই অনেক টাকা টোল গুনতে হয় এলাকাবাসীকে। ভ্যান চালক হানিফ বলেন, একটি ভ্যান পার করতে এখন ইজারাদারকে দিতে হচ্ছে ১৫ টাকা। ভ্যান নিয়ে একবার যাওয়া-আসা করতে ৩০টাকা দিতে হয়।

কৃষক আনিছুর রহমান বলেন সমসপাড়া হাটে ধান, গম বা ভূট্রা নিয়ে যেতে পারঘাটে প্রতিমন পাঁচ টাকা টোল দিতে হয়। তারা বলছেন, বছরের পর বছর এভাবে চললেও সুষ্টু তদারকির অভাবে এলাকার লোকজন অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছেন। অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে এবং সরকার নির্ধারিত টোল আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

সমসপাড়া-ভাঙ্গাজাঙ্গাল পার ঘাটের ইজারাদার আজাহার হোসেন বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে ঘাট ইজারা নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি ঘাটে টোল আদায়ের সরকার নির্ধারিত রেট জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আগের ইজারাদার যে ভাবে আদায় করেছেন আমিও সেভাবে আদায় করছি। তবে জালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে প্রতিজন দুই টাকা টোল বাড়ানো হয়েছে। তবে টোল আদায়ে কোন রশিদ প্রদান করা হয়না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, ঘাট ইজারার সময় প্রতি ইজারাদারকে টোল আদায় তালিকা সরবরাহ করা হয়। অতিরিক্ত টোল আদায়ের কথা শুনে তাকে একটি নোটিশ করেছি। ঘাট ইজারাদার সরকার নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত আদায় করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সেপ্টেম্বর ০১,২০২২ at ১৬:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /রম /শই