টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেন সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম

সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীরের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডারে কারচুপি, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রকল্পে নয়ছয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার নামে।

বুধবার (৩১ আগষ্ট) সকালে সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের মাছুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

সম্প্রতি মাছুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাথরুম ও টয়লেট (ওয়াস ব্লক) নির্মাণের ৩য় ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন আসলাম পারভেজ। এই বছর ঠিকাদার আসলাম পারভেজ পবিত্র হজ করার জন্য যান। এই কারণে সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনী নিজেই ঠিকাদারের পক্ষ থেকে সমস্ত মালামাল ক্রয় করেন।

আরো পড়ুন :
ধামরাইয়ে  আশ্রয়ণ প্রকল্পের গর্তে জমে থাকা পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
ফ্রান্সে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম

শুধু তাই নয়, সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর তার পছন্দের ঠিকাদারকে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লকসহ নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেয় এবং তিনি নিজেই ঠিকাদার আসলাম পারভেজের সাথে পার্টনার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এই নিয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিস সুত্রে জানা যায়, সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর সিরাজগঞ্জে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন টেন্ডারে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করেই চলছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর সিরাজগঞ্জে যোগ দেওয়ার পর সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যক্তিগত পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসলাম পারভেজ এন্টার প্রাইজকে একাধিক কাজ পাইয়ে দেন।

দিনের পর দিন একই ঘটনা ঘটতে থাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে। শূন্য অভিজ্ঞতার লাইসেন্স মেসার্স আসলাম পারভেজ এন্টার প্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, তিনি তা করেছেন।

সহকারীর পছন্দের ঠিকাদার আসলাম পারভেজ বলেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাজ আমিই বেশি করি। কারণ আমি কাজে কোন অনিয়ম করি না। এজন্য অফিসের সবাই আমাকে কাজ দেয়।

এ ব্যাপারে সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর বলেন, কাগজ-পত্র ঠিক থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো টেন্ডার হলে তাতে আমিই সব ক্ষমতার অধিকারী নই। এজন্য নির্দিষ্ট কমিটি রয়েছে। আমি ওই কমিটির একজন সদস্য মাত্র। কিন্তু আমাকে জড়িয়ে অভিযোগ দেওয়া করা হচ্ছে এতে আমি কিছুই জানি না বলেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, আমি গত ৩০ আগষ্ট যোগদান করেছি। এই বিষয়ে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগস্ট ৩১,২০২২ at ১২:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /অরল /শই