পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ, রাবার বুলেট নিক্ষেপ, পুলিশসহ আহত ২৭

নরসিংদীর মনোহরদীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এসময় পুলিশসহ বিএনপির ২৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। রোববার দুপুরে উপজেলার ঢাকা-কিশোরগঞ্জ সড়কের হেতেমদী এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।

আহতদের শিবপুর, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ভোলায় দুই নেতার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি।

দুপুরে মনোহরদী উপজেলার হেতেমদী এলাকা থেকে সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুর রহমান দোলনের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ সড়কের দিকে এগোতে থাকে। মনোহরদী উপজেলা সদরের দিকে যাবার উদ্দেশ্যে বাঘবের নামক এলাকায় পৌঁছলে মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়।

এতে উত্তেজিত বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শুর হয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ২৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুর রহমান দোলন।

এছাড়া নেতাকর্মীদের ইটের আঘাতে শিবপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেজবাহ উদ্দিন, মনোহরদী থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন, ওসি তদন্ত জহিরুল আলমসহ পুলিশের ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় পুলিশ। মনোহরদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মনোহরদী উপজেলার হেতেমদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ইটভাটায় বিএনপির সমাবেশ করার কথা ছিল।

কিন্তু সরকার দলীয় লোকজন স্থানটির আশপাশ এলাকা আগেই দখল করে নেয়। নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসার সময় এবং মিছিলে অংশগ্রহণ করায় পুলিশ ও আওয়ামীলীগের লোকজন হামলা চালায়। পুলিশের রাবার বুলেটে গুলিবিদ্ধ ২৮ জন এবং লাঠিপেটায় আরও ৫-৭জন আহত হয়েছেন। এতে মনোহরদী পৌরসভা শ্রমিকদলের সভাপতি বাবুল কমিশনার, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ, রমজান তালুকদার, মনি, খোকন, নজরুল ইসলামসহ প্রায় ৩৫ নেতা-কর্মী আহত হন।

আরো পড়ুন:
যশোরের বাগডাঙ্গা গ্রামে কয়েকশত মানুষের মাঝে মিন্টুর গণভোজ বিতরণ
মহম্মদপুরে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও পথচারীরা

মনোহরদী থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করার করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারসহ ১০ পুলিশ আহত হয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান জানান, একই এলাকায় আওয়ামী লীগ বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীর কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকায় বিএনপিকে মিছিল নিয়ে সড়কে না যেতে অনুরোধ জানানো হয়। তারা অনুরোধ না রেখে পাল্টা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এসময় বাধ্য হয়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় ১০/১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আইনী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

আগষ্ট ২৮,২০২২ at ২০:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সাইরু/এসএম