মহম্মদপুরে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও পথচারীরা

মাগুরার মহম্মদপুরে স্কুল-কলেজ, মাদ্রসাগামী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পথচারীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে। বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে চলাচলে বিঘি্নত হতে হচ্ছে।

গত ১২ আগষ্ট কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে আছিয়া প্রি-ক্যাকেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেনির কোমলমতি শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। শুধু নুসরাত নয়; প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা মো. আকিদুল হোসেন মোল্যা ও মশিউর রহমানসহ আরো অনেকেই আক্রমনের শিকার হয়েছেন।

আরো পড়ুন :
পাখিমারা বিলে বাঁধ সংস্কার ও টিআরএম চালু না হওয়ায়……..কপোতাক্ষ খননে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে!

প্রাণিসম্পদ দপ্তর সুত্রে জানা যায়, তাদের সহযোগিতায় মহম্মদপুর উপজেলার- বাবুখালি, বিনোদপুর, দীঘা, রাজাপুর, নহাটা, পলাশবাড়ীয়া ও মহম্মদপুর সদরসহ ৮টি ইউনিয়নে একযোগে সরকারীভাবে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা হতো। কিন্তু এ্যনিমেল ওয়ার্ড ফাউন্ডেশন নামে একটি বিশ^ সংস্থা বিনা কারণে প্রাণী হত্যা করা যাবেনা বলে মত প্রকাশ করেন। এর ফলে কুকুর নিধন সরকারীভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় উপজেলার সর্বত্র বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর ফলে উপজেলা সদর বাজার, স্কুল-কলেজের সামনের সড়কসহ গ্রামাঞ্চলের সড়কে কুকুর দল বেধে চলাফেরা করে। এতে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘি্নত হতে হচ্ছে। চরম আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পথচারীরা। এমনকি প্রতিনিয়ত হতে হচ্ছে দূঘৃটনার শিকার। এতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এলাকার শিশুরাসহ স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করছে। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটার কারণে অভিভাবকরাও চরম অতঙ্কে রয়েছেন। এমনকি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতে তারা ভয় পাচ্ছেন। তাই অভিভাবকদের দাবী জরুরি ভিত্তিতে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত মো. নায়েব আলী জানান, আমার মেয়ে নুসরাত জাহানসহ কোমলমতি কয়েকজন শিক্ষর্থী কুকুরের আক্রমনে আহত হয়েছে। কুকুরের অত্যাচার দিন দিন বেড়ে চলেছে। প্রায়ই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কুকুরের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে চাইনা। আমরাও ছেলে মেয়ে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। তাই কুকুর নিধন করা প্রয়োজন।

মহম্মদপুর বি.এস.এ.আর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, উপজেলার সর্বত্র কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত আক্রমনের শিকার হচ্ছে। শুধু তাই নয় বেওয়ারীশ কুকুরের কারণে রাস্তা দিয়ে চলা-চল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই বেওয়ারিশ কুকুর নিধন প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপুল কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রতি বছর বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা হত। কিন্তু কুকুর নিধন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় কমিউনিকেবল ডিজিজ কট্রোল (সিডিসি) নামক ঢাকার একটি সংস্থা র‌্যাবিস নামক ইনজেকশনের মাধ্যমে কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাদান (এমডিভি) প্রয়োগ করে থাকেন।

কিন্তু এই বাজেট আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আমরা শুধু জনবল দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। তবে বছরে দুই থেকে তিন বার এই টিকা দিলে ভালো হতো। উপজেলা সমন্বয় মিটিংয়ে এই বিষয়ে আমি আলোচনা করবো। তবে কুকুর, বিড়াল, শেয়াল ও বানরে কামড়ালে বা আছড়ে নিলে সঙ্গেসঙ্গে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিতেও তিনি পরামর্শ দেন।

আগস্ট ২৮,২০২২ at ২০:১২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /ইজ /শই