উপকূলজুড়ে ইলিশের আকাল, হাজার হাজার জেলে বেকার

ইলিশ ধরা না পড়ায় ভোলার উপক‚লের অন্তত ত্রিশ হাজার খুটা জেলে বেকার হয়ে পড়েছে। গোটা উপকূলজুড়ে চলছে ইলিশের ভয়াবহ আকাল। ইলিশের আশায় উত্তাল সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে এসব জেলেরা ফিরছে খালি হাতে। ভরা মৌসুমে ইলিশ না পেয়ে জেলেদের মাঝে বিরাজ করছে চরম হতাশা। সংসারের ভরন-পোষনের যোগান নিয়ে এদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

ভোলার উপক‚লের জেলেরা দীর্ঘ তেতুঁলিয়া ও মেঘনার পাড়ে শত শত নৌকা কিনারে তুলে রেখেছে। জেলে হারুন জানান, ৭/৮ দিন আগেও প্রত্যেকবারে ৪/৫টি ইলিশ পেয়েছেন। এখন আর নেই। গত তিনদিনে একটি ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে না। ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। একই বক্তব্য কবির হাওলাদার, কালাম মাঝি, ইউসুফ মাঝিসহ অধিকাংশ খুটা জেলেদের।

আরো পড়ুন :
বগুড়ায় বিএসটিআই‘র অভিযান : অবৈধভাবে নিম্নমানের পণ্য সামগ্রী উৎপাদনে আড়াই লক্ষ টাকা জরিমানসহ ১০ লক্ষ টাকার মালামাল ধ্বংস

জেলেরা জানান, একেকটি ডিঙি নৌকায় ৪/৫ জন জেলে মাছ শিকার করে আসছেন। ৪/৫টি পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্ভর করছে একটি নৌকায়। কিন্তু কাঙ্খিত মাছ মিলছে না। লাখ লাখ টাকা দাদন নেয়া এসব জেলেরা ইলিশ না পেয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

ভোলার সবগুলো আড়ৎ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোন ইলিশের আমদানি নেই। ঢালচরের আড়ৎদার মোক্তার ফরাজী জানান, এক সপ্তাহকাল কোন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তারাও পড়েছেন ইলিশের ব্যবসা নিয়ে চরম উৎকন্ঠায়। শুধু খুটা জেলেরা নয় গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারি জেলেরাও ফিরছে অনেকটা শুন্যহাতে।

সামরাজ ঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী ও আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, মৌসুম শুরু হয়ে গেছে আগেই। কিন্তু ইলিশের দেখা নেই। তিনি জানান, প্রত্যেক ট্রলার মালিকের অন্তত এক থেকে দেড়লাখ টাকার লোকসান হয়ে গেছে। একেকটি ট্রলারে বাজারঘাট নিয়ে অন্তত তিন দফা সাগরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মাছ ছাড়াই ফিরছে জেলেরা। মৌসুমের প্রথম দিকে ইলিশ না পেয়ে জেলেসহ ইলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিকরাও পরেছেন চরম উৎকন্ঠায়।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদউল্লা বলেন, নদ-নদীতে পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ রয়েছে। ভোলার বেশীর ভাগ জেলে হলো উপকূলীয়, জেলেরা আবহাওয়া বা অভিজ্ঞতার অভাবে ঠিক সময় জাল পাততে পারছেন না। এ কারণে তারা কাঙ্খিত মাছটা পাচ্ছেন না।

আগস্ট ২৫,২০২২ at ১৯:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /কজ /শই