নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজালে ২ ঘন্টায় মিলছে না ২০ মিনিটের বিদ্যুৎ

নরসিংদীতে মানা হচ্ছে না এলাকা ভিত্তিক বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের নির্দেশনা। ফলে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজালে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। দিনে কয়েক দফায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে। টানা বিদ্যুৎ সংকট আর তীব্র গরমে চরম ভোগান্তির মধ্যে বিদ্যুত গ্রাহকসহ শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় মরজাল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মাজহারুল আলম সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্রকে মোবাইল ফোনে বলেন, মরজাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন মরজালে প্রতিদিন ২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন।

আরো পড়ুন :
ঘাড়াঘাটে নদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
উলিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো এসএসসি পরীক্ষার্থীর

কিন্তু সেক্ষেত্রে আমি বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৮ মেগাওয়াট। তাই বর্তমানে এত ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতি ২ ঘন্টায় ২০ মিনিটও বিদ্যুৎ থাকছে না সহজ স্বীকারোক্তি এই ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের। এদিকে আজ ১৮ ই আগস্ট সরকারী ছুটি থাকলেও এতো লোড শেডিং এ মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে। পরবর্তীতে এই ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মাজহারুল আলম আরো বলেন, আমরা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে জনসাধারণকে যে নির্দেশনা দিয়েছি তা মানতে জনগন নারাজ। মরজাল সহ আশ পাশের অনেক এলাকায় রাত ৮ টার পরে দোকান পাট বন্ধ করার কথা থাকলেও তারা এই নিয়ম মানছে না।

ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে অনেক এলাকায় বিদ্যুতের অপব্যবহারের কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এদিকে মরজাল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে লক্ষ্য করা যায়, বিদ্যুতের অযথা অপচয়। অফিসে মানুষজন না থাকলেও চলছে ফ্যান ও লাইট। রায়পুরার মরজালে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।

কিন্তু চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ মিলছে অর্ধেকেরও কম। এজন্য এক থেকে দুই ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। প্রতি ২ ঘন্টায় ২০ মিনিটও বিদ্যুৎ থাকছে না। মরজালের আশে পাশের এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। এসব এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ায় এলাকা নির্ধারণ করে ক্রমান্বয়ে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের।

মরজাল বাজারের টেইলার্সের ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, এলাকা ভিত্তিক এক থেকে দুই ঘণ্টার কথা বলা হলেও ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে। আজ বৃহস্পতিবার দিনে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়েছে। মরজাল বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক পাবলিক পরীক্ষার্থী ফয়সাল মিয়া বলেন, তীব্র গরম আর বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরে থাকা যায় না। ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছি না। সামনেই আমাদের পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবো।

নরসিংদী জেলার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ইউসুফ সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্রকে মোবাইল ফোনে বলেন, আজ ১৮ ই আগস্ট বৃহস্পতিবারের লোড শেডিং এর কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেন। এছাড়া আজকে লোড শেডিং এর সংখ্যা প্রায় ৫০।

সারা দেশের মত আমরাও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। জেলায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন সেই পরিমাণের অর্ধেকের কম বিদ্যুৎ বরাদ্দ আমরা পাচ্ছি। মরজালের জন্য মাত্র ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেই কারণে আজকে লোড শেডিং এর সংখ্যা ৫০। তাই এক থেকে দুই ঘণ্টা করে এলাকা ভিত্তিক বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের নির্দেশনা মানা যাচ্ছে না। আশা করা যাচ্ছে অতি দ্রæত এই সমস্যা সমাধান হবে।

আগষ্ট ১৮,২০২২ at ১৭:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সফ/শই