চিকিৎসকের পদায়নে: স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে ভূরিভোজ

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক পদে এক চিকিৎসকের পদায়নে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে ভূরিভোজ আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে বলে জানা গেছে।

প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই চিকিৎসকদের চেম্বারগুলো বন্ধ করে সেবা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় বহির্বিভাগের বারান্দায় এই ভোজের আয়োজন করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ফাইজুর রহমান ফয়েজ সম্প্রতি আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পদে পোস্টিং নিয়ে পুনরায় এই হাসপাতালে যোগ দান করেছেন। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও স্টাফদের ভূরিভোজের আয়োজন করান ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ।

দুপুর ১২টা থেকেই হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে ডেকোরেটার থেকে আনা টেবিল-চেয়ার বসিয়ে ভূরিভোজ আয়োজনের অনুষ্ঠান কার্যক্রম। দুপুর ১টা থেকে একে একে সব চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফরা এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

এ সময় জেলার সিভিল সার্জন ডা. একরামউল্লাহ, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান, জেলা বিএমএ ও স্বাচিপ নেতা ডা. আবু সাঈদ, ডা. শাহ আলম, জেলা সিভিল সার্জন অফিসের স্টাফ এবং অন্যান্য হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা ভূড়িভোজে অংশ নেন।

বহির্বিভাগে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও সেটি ব্যাঘাত ঘটে খাবারের আয়োজনের কারণে। অনেক রোগী এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেছেন।

আরো পড়ুন:
পাবনার বেড়ায় করতোয়ার পত্রিকার জন্মবার্ষিকী পালিত
সাভারে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক

সদর উপজেলার সুহিলপুর এলাকার আসমা বেগম নামের এক রোগী বলেন, ‘সকালে ১১৬ নম্বরে ডাক্তার দেখিয়েছি। কিছু পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখি দোতলার সব রুম বন্ধ। ডেকোরেটারের লোকজন চেয়ার সাজাচ্ছিল।

মহিবুল ইসলাম নামের আরেক রোগী বলেন, ‘আমরা শুনে আসছি সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার সময় দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। দোতলায় গিয়ে দেখি ডাক্তার নাই। সামনে চলছিল যেন বিয়ে বাড়ির আয়োজন।

তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পদায়ন পাওয়া ডা. ফাইজুর রহমান ফায়েজ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ ধরনের আয়োজন আগেও হাসপাতালে হয়েছে। তবে তিনি আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তাছাড়া যখন খাওয়া-দাওয়া শুরু হয়, তখন হাসপাতালে রোগী ছিল না।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, ‘আমি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আমরা কনফারেন্স কক্ষে খাওয়া-দাওয়া করেছি। বাইরের ডেকোরেশন নজরে পড়েনি। এ সময় তো কোনো রোগী আসেনি, তাই চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়নি।

ভূরিভোজে উপস্থিত এত মানুষের মধ্যে কোনো রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে কি না তা বলা কি সম্ভব, এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, ‘তা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ভালো বলতে পারবেন।

আগষ্ট ১২,২০২২ at ১৯:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ নিইআ/এসএম