বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দলীয় কর্মীদের রাজপথ দখলের প্রস্তুতির আহ্বান

সরকার হটাতে ‘রাজপথ দখলে’র প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফখরুল বলেন, এই লড়াইয়ে অবশ্যই আমাদের শরিক হতে হবে, তিনি বলেন আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, রাজপথ আমাদেরকে দখল করতে হবে।  তিনি আরো বলেন, এই সংগ্রাম শুরু হয়েছে, লড়াই শুরু হয়েছে, যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এই লড়াই আমাদের প্রাণের লড়াই, আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই, এই লড়াই বাংলাদেশকে লক্ষা করবার লড়াই। এটা বিএনপির নয়, তারেক রহমানের নয়, আমাদের নয়, এই লড়াই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে বাঁচাবার লড়াই।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এক সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এই নেতা-কর্মীদের প্রতি এই আহবান জানান।

 রাজপথের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা অবশ্যই এই ফ্যাসিস্ট দানবীয় হাসিনা সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই আমরা একটা জনগণের সরকার, জনগণের রাষ্ট্র, জনগনের একটা সমাজ তৈরি করবো।

সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খুব পরিস্কার করে বলতে চাই, আর কাল বিলম্ব না করে পদত্যাগ করুন। কারণ আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন, আপনারা মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারছেন না। সুতরাং আপনাদেরকে এই মুহুর্তে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে, সরকার গঠন করতে হবে। আগামী ২২ আগস্ট থেকে সারা দেশে উপজেলা-জেলা-মহানগর পর্যয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি অব্যাহতভাবে চলবে বলে ঘোষণা করেন তিনি।

আপনারা জানেন, আগামীকাল রোববার জেলা পর্যায়ে সমাবেশ আছে। সেই সমাবেশগুলো আমরা করব। এরপর আগামী ২২ তারিখ থেকে সকল উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে আমরা ছড়িয়ে পড়ব এবং সেই একই ভাবে প্রত্যেকটি উপজেলা, জেলায় ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করব ইনশাল্লাহ।

আরো পড়ুন :
হাতীবান্ধা থেকে পাচার হওয়া কলেজ ছাত্রী ভারতে উদ্ধার
সিলেটে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ
শুক্রবার মাঠে নামছে সিলেটের বিএনপি

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনের উদ্যোগে এই সমাবেশে হয়। সমাবেশের মঞ্চের ব্যানারে লেখা আছে- জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নুরে আলম ও আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ।’ ব্যানারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বড় ছবির পাশপাশি জিয়াউর রহমানের ছবিও রয়েছে।

নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পাঁচটি ট্রাককে একত্রিত করে উন্মুক্ত মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। দুপুর ২টায় শুরু হয়ে সমাবেশ শেষ হয় বিকাল ৬ টার পর। ফকিপুলের মোড় থেকে কাকারাইল পর্যন্ত পুরো সড়ক ও ফুনপাতের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর নয়া পল্টনের সামনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপি সমাবেশ করেছিল।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে চাল, ডাল, তেল সব কিছুরই দাম বেড়ে যাচ্ছে। আরেকদিকে বিদ্যুতের যে সমস্যা সেটা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সরকার আমদানি করার জন্য, দুর্নীতি ও চুরি করার জন্য আমার দেশে যে গ্যাস আছে সেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই। তাদের নিজস্ব লোকদের দিয়ে গ্যাস আমদানির ফলে আজকে বিদ্যুতের দামও অনেক বাড়ানো হয়েছে।

বিদ্যুতের কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে তাদেরকে ২৮ হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। গত ৭ বছরে প্রায় ২৭০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে তার হিসাব আছে ২৪০ বিলিয়ন ডলার। প্রশ্ন আমাদের এই ৩০ বিলয়ন ডলার কোথা গেলো ? কারা নিয়ে গেলো? তা জনগন জানতে চায়।

অগাস্ট ১১,২০২২ at ২১:৩৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ ভোকা/এসএম