সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ

প্রতিদিন সড়কে ঝরছে প্রাণ। সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক পরিবার হারিয়েছেন আপনজন। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায় চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশে ৬৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪২ জন। আর এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯৮টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতে নিহত হয়েছেন ২৫১ জন যা মোট নিহতের ৩৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হারও ৪৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।

আরো পড়ুন :
মেগা ফিড কোম্পানীর প্রতারনার শিকার ঝালকাঠির এইচ বি এ্যাগ্রো ফার্ম: ক্ষতিপুরন দাবী
ঠাকুরগাঁওয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

শনিবার (৬ আগষ্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রেড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের শীর্ষ ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১০৫ জন নারী ও ১০৯টি শিশুও রয়েছে। এদের মধ্যে ১১৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন, অর্থাৎ ১৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

একই সময়ে ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং সাত জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় (রেলক্রসিং দুর্ঘটনাসহ) ৪১ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় যানবাহন ভিত্তিক নিহতের চিত্র দুর্ঘটনায় যানবাহন ভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২৫১ জন (৩৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ), বাস যাত্রী ৬১ জন (৮ দশমিক ২৫ (শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি আরোহী ৫৫ জন (৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ৫৭ জন (৭ দশমিক ৭১ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-মিশুক) ১৪৯ জন (২০ দশমিক ১৬ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-চান্দেরগাড়ি-মাহিন্দ্র-টমটম) ২৬ জন (৩ দশমিক ৫১ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান আরোহী ২২ জন (২ দশমিক ৯৭ শতাংশ) নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন : রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনা গুলোর মধ্যে ২৫২টি (৩৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৯৯টি (৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ১০৯টি (১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৬৪টি (১০ দশমিক ১২ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৮টি ১ দশমিক ২৬ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন : দুর্ঘটনা গুলোর ১৪৫টি (২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৫৭টি (৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১২৭টি (২০ দশমিক ০৯ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৮৬টি (১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৭টি (২ দশমিক ৬৮ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার বিভাগ ওয়ারী পরিসংখ্যান : ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৬ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। তারা বলছে, দুর্ঘটনা রোধে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে। চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে।

আগষ্ট ০৭,২০২২ at ১০:৫৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আকারু/শই