হাতীবান্ধায় কমিউনিটি ক্লিনিকের বেহাল দশা, দেখার কেউ নেই

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে বেহাল দশা দেখা দিয়েছে,সেবা বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখাগেছে, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্নিনিকগুলোর স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রাম পর্যায়ে টিকা দান, পরিবার পরিকল্পনা, জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার কথা কিন্তু কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (CHCP) দায়িত্বে অবহেলা এবং অনিয়মিত অফিস করার কারণে গ্রামের বৃহৎ জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ঘুরে ২ আগস্ট সানিয়াজান ইউনিয়নের আরাজি শেখ সুন্দর কমিউনিটি ক্লিনিকে দুপুর ২টার সময় গিয়ে দেখা যায় তালাবদ্ধ। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) আফরোজা আক্তারের সাথে ফোনে কথা বললে তিনি বলেন অফিস টাইম সকাল ৯ থেকে দুপুর ৩টা কিন্তু প্রতিদিন আমাদের রিপোর্ট পাঠাতে হয়, অফিসে নেটওয়ার্ক পায়না তাই বাড়ি চলে এসেছি। ৩ আগষ্ট পশ্চিম বিছনদই কমিউনিটি ক্লিনিকে দুপুর ১টার সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অফিস তালাবদ্ধ। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) দিদারুল রহমান মুঠোফোনে বলেন আজকে স্বাস্থ্য সহকারী অফিসে টিকা দেওয়ার কথা তাই আমি অফিস যাইনি।

পশ্চিম বিছনদই গ্রামের নুর ইসলাম ও রতন নামের ২ ব্যক্তি বলেন কোন কোন দিন তারা অফিস খোলে এবং ১টার মধ্যে চলে যায়। আজকে অফিস খোলেনি। ৪ আগষ্ট সরেজমিনে বাড়াইপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায় অফিসে তালা লাগানো। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) পাপিয়া আক্তারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন সকালে অফিস গিয়েছিলাম বাচ্চা সাথে থাকার কারনে ১২টার দিকে বাসায় চলে এসেছি। ঐ এলাকার বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র, নুর মোহাম্মদ ও রাকিব নামের ৩জন ব্যক্তি বলেন পাপিয়া ম্যাডাম মাঝেমধ্যে এসে ১/২ ঘন্টার মধ্যে চলে যান।

জানাগেছে, স্বাস্থ্য বিভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো সিবিএইচসি অপারেশন প্লানের আওতায় স্বাস্থ্য সেবা বাস্তবায়িত করছিল। বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহয়তা ট্রাস্টের প্রক্রিয়াধীন। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে সাবেক ১টি ওয়ার্ড, বর্তমান ৩টি ওয়ার্ডের ৬ হাজারের মত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য ১টি করে কমিউনিটি ক্লিনিক দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ১জন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, ১জন করে স্বাস্থ্য সহকারী ও ১জন করে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী আছেন। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঔষধ সরবরাহ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা।

এবিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাঈম হাসান নয়ন বলেন আপনাদের তথ্যের সাথে আমি সহমত। কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোর সুপারভিশন মনিটরিং চলছে। আজকে তাদের সাথে মিটিং আছে সেখানে এনিয়ে আলোচনা করব যাতে তারা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করে।

অগাস্ট ০৪,২০২২ at ১৭:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কাআজা/রারি