অভিযোগ দিয়ে যাত্রা শুরু কুবির শেখ হাসিনা হল

দেড় বছরের প্রকল্প পাঁচ বছরে শেষ করার পরও নানা অভিযোগ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হল। উদ্বোধনের একদিন পার না হতেই হলের কক্ষ দখল, নিরাপত্তাহীনতা, সিট বরাদ্ধে বৈষম্য, অসম্পূর্ণ নির্মাণকাজ ও আসবাবপত্র না দিয়েই হলে ছাত্রী উঠার অনুমতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে এ হলটির বিষয়ে।

আসবাবপত্র না থাকায় শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে না পারলেও শীঘ্রই তা আসবে এমন আশ্বাসে হলে নিজেদের মালামাল রাখছেন তারা। তবে ২১৩, ২১৪, ২১৫, ২০৭, ২০৮ নম্বর কক্ষসহ তৃতীয় তলা ও নিচ তলার শিক্ষার্থীদের কয়েকটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

রোমা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বরাদ্দকৃত রুমে ছাত্রলীগ তালা দিয়ে রেখেছে। আমরা রুমে এসে কেউ ঢুকতে পারছি না। ছাত্রলীগ যদি রুমে তালা দিয়ে রাখে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন আমাদেরকে হলে সিট দিল?

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সিট বরাদ্দের সময় প্রশাসন ছাত্রলীগ নেতাদেরকে আলাদা করে ডেকে তাঁদের কর্মীদের তালিকা চেয়ে নিয়েছেন। সে অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সিঙ্গেল সিট দিয়েছে। এরপরও ছাত্রলীগ অন্যান্যদের কক্ষ দখলে নিতে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, প্রশাসন হলের সিট নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। অন্যদের রুমে যদি ছাত্রলীগের কেউ তালা দিয়ে থাকে এবং এটি প্রমাণিত হয়, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

ছাত্রলীগের কক্ষ দখলের অভিযোগের বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, তালা লাগানোর বিষয়টি আমি শুনেছি। কে তালা লাগিয়েছে এখনো জানতে পারিনি। আসবাবপত্রের বিষয়ে তিনি জানান, শীঘ্রই আসবাবপত্র দেওয়া হবে। এখন কেউ মেঝেতে থাকতে চাইলে থাকতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কাজ শুরুর ১৮ মাসে মধ্যে প্রকল্প বুঝিয়ে দেওয়ার শর্তে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় ছাত্রী হলটির কাজ শুরু করে আবদুর রাজ্জাক (জেভিসিএ) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় চার দফা মেয়াদ বাড়ায় কুবি কর্তৃপক্ষ। সবশেষে ৬৫ মাস পর গত ২৯ জুন অসম্পন্ন কাজ শেষ করলে বিল প্রস্তুত করা হবে- এমন শর্তে প্রশাসন প্রকল্প বুঝে নেয় বলে জানিয়েছেন টেক এন্ড হ্যান্ডওভার কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. বিল্লাল হোসাইন। তবে প্রকল্প বুঝে নেওয়ার একমাস পর এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

শিক্ষার্থীরা হলের ওঠার পরও নির্মাণকাজ চালিয়ে নেওয়া হলে তাঁদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কি না- এমন প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন জানান, নিরাপত্তার ঘাটতি হবে না। তবে শিক্ষার্থীরা অস্বস্তিতে পড়তে পারে। এ বিষয়ে হল প্রশাসন ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

অগাস্ট ০৪,২০২২ at ১২:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/চমা/রারি