কুবিতে উপাচার্য-ছাত্রলীগ দন্দ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৪ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাকরি ও টেন্ডার দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ও শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসময় উপাচার্য ও ছাত্রলীগ নেতাদের উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়। এর আগে ছাত্রকল্যাণ ফান্ড গঠন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য উপাসনালয়, ছাত্রীদের কমনরুম, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে ভর্তুকিসহ ১৪ দফা দাবিতে মানবববন্ধন করে শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দেড়ঘণ্টার মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ না আসলে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে যায় তারা।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করলে কেন অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করেছে তা জানতে চান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন। এসময় উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সাথে বাকবিতণ্ডে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ নেতারা। এসময় উপাচার্যের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করে। এসময় ছাত্রলীগ টেন্ডার, নিয়োগের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে উপাচার্য তাদেরকে একটি কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। এছাড়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাকরিসহ বিভিন্ন টেন্ডার, নিয়োগ, ইদের টাকার বিষয় তুলে ধরেন উপাচার্য। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।

বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে উপাচার্য ছাত্রলীগ সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমরা ছাত্রলীগের চাকরি নেওয়ার জন্য আসছো, তোমরা কন্ট্রাক্টগুলো অফিসিয়ালি দিতে মানা করেছো, আমরা ইজিপিতে কন্ট্রাক্ট দিলে তোমার নাকি ছাত্রলীগের টাকা পয়সা আসে না, ঈদের সময় টাকার জন্য আসছিলা। পরে আমি তোমাদেরকে একটা কন্ট্রাক্ট দিয়েছিলাম। এইসকল দাবি নিয়ে আসছিলা। এছাড়া অন্য কোন দাবি নিয়ে আসো নাই। প্রতিত্তোরে ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, স্যার আপনি বাসায় লোক নিয়োগ দেন সেটা বৈধ? আমি ছাত্রলীগের নিয়োগ চাই সেটা অবৈধ?

উপাচার্যের নিয়োগ-টেন্ডারের অভিযোগ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, উপাচার্য আসার পর থেকে এখনও কাউকে উনার দপ্তরে সহজে ঢুকতে দেয়না। সেখানে উনার থেকে কোন কাজ পাওয়ার প্রশ্নই আসেনা। আমি গত তিন চার মাসে উপাচার্যের দপ্তরে দুই-তিন বারের বেশি যাইনি। তবে রমজানে ঈদের আগে একটা কাজে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাস্তা খরচের জন্য উপাচার্য কিছু টাকা দিয়েছিল। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদকে একটা টেন্ডার দিছিল। এর বাহিরে গত কয়েকমাসে উপাচার্যের কক্ষে আমি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিদাওয়া নিয়ে দু-তিনবার গিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য ক্যাম্পাসে আসার পর একজন ড্রাইভার এবং গত ৩০ জুন আরও তিনজনসহ মোট ৪ জনকে মাস্টার রোলে নিয়োগ দিয়েছে। যদিও উপাচার্য বলেছেন এভাবে নিয়োগ দেয়া অবৈধ। এদিকে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদকে টেন্ডার নেওয়ার বিষয়ে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, ছাত্রলীগ বলছে স্যার সব কাজের টেন্ডার তো আপনি ইজিপিতে দিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু আমি তো ইজিপিতে দেই নি কারণ আমি চাই না এখানে মারামারি হোক। ওরা বলেছিল স্যার আপনি ইজিপির বাইরে দেন তাই আমি তাদের দিয়ে দিয়েছি। আর তাদের যেকোনো ন্যায্য দাবি আমি মেনে নিয়েছি।

জুলাই ২২,২০২২ at ১০:২৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/চৌমা/রারি