লোডশেডিংয়ে বেশি ভুগবে উত্তরবঙ্গের আট জেলা

নিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং শুরু হয়েছে সারা দেশে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ওজোপাডিকো ছাড়া দেশের চারটি বিতরণ সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সূচি দিয়েছে। লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি ভুগবে উত্তরবঙ্গের আট জেলা। এসব জেলায় এমনিতেই দাবদাহ চলছে; বিদ্যুৎ না থাকলে বড় বিপাকে পড়বে মানুষ।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দেশদর্পণকে বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশি্বক জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। সারা দুনিয়ায় কম-বেশি এর প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশেও বৈশি্বক সংকটের কারণে কিছু সমস্যা হয়েছে। তাই জ্বালানি-সাশ্রয়ের কথা বলা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ের ব্যবস্থা করেছি আমরা।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরে ছাড়া কোথাও তেমন বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। আমরা চেষ্টা করব ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ সেখানে সঞ্চালন করতে। আমাদের ব্যাকফিড আছে। চেষ্টা করব মানুষ যাতে ভালো থাকে। তবে এ সংকট সাময়িক, দ্রুত তা কেটে যাবে।’

উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নিলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও পঞ্চগড় এই আট জেলার মধ্যে বড় বিদুৎকেন্দ্র আছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায়। সেখানে ৫২৫ মেগাওয়াটের কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া সৈয়দপুরে ২০ ও রংপুরে ২০ মেগাওয়াটের ডিজেলভিত্তিক সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াট ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১১৫ মেগাওয়াটের তেলবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। পঞ্চগড়ে ৮ মেগাওয়াটের একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। উত্তরের আট জেলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সম্মিলিত ক্ষমতা প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট। সেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ২৪ টাকার বেশি পড়ায় দুটি ডিজেল বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বিকেলের পর বন্ধ হয়ে যায়। উত্তরের আট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ছাড়া বাকি বিদ্যুৎ সেখানে ঢাকা থেকে পাঠানো হয় দীর্ঘ সঞ্চালন লাইনে। ইতিমধ্যে কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া ১২৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ১২৫ মেগাওয়াটের আরেকটি ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে মেরামত করা হচ্ছে। বড় পুকুরিয়ায় এখন টেনেটুনে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। এমনিতেই উত্তরের আট জেলায় বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ২০০ মেগাওয়াটও চলতি মাসে বন্ধ হয়ে যাবে কয়লার অভাবে। এ পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের সবচেয়ে বড় শিকার হবে উত্তরের জনপদের মানুষ।

জুলাই ২০,২০২২ at ১১:৫২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/রারি