রাবিতে অভিযান চালিয়ে অবৈধদের উচ্ছেদ করে ২০জন বৈধ শিক্ষার্থীদেরকে তুলে দিলো হল প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের আসন থেকে নামিয়ে সেখানে বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়েছে হল প্রশাসন।

শুক্রবার (১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। চলে ভোররাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এ সময় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে প্রাধ্যক্ষ পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।

এখন পর্যন্ত হলে অবৈধভাবে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে ২০ জন আবাসিক শিক্ষার্থীকে সিটে তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও মোট ৪৪ জন শিক্ষার্থীকে তোলার কথা ছিল।

এ বিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে হলে সিট কেন্দ্রিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে৷ অবৈধভাবে হলে অবস্থান, সিট দখল ও বৈধ শিক্ষার্থী নামিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তারই প্রেক্ষিতে বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যাতে হলে সকল শিক্ষার্থী বৈধভাবে অবস্থান করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ৯৪ টা সিট খালি হয়েছিল, যেগুলো ৬৬ জনকে দিয়েছিলাম যারা ২০১৭-১৮ সেশনের আবেদন করে ভাইভা দিয়েছিল। আমরা ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের এ্যালটমেন্ট দিতে পারি নি। এ কারণে আমরা ৬৬ জনকে রেখেছিলাম তাদের মধ্যে আমরা হলে তুলেছিলাম ২২ জনকে, যাদের মধ্যে ১৩ জন আগে থেকে হলে অবস্থান করছিল আর ৯ জনকে আমরা হলে তুলতে পেরেছিলাম। আর ৪৪ জন বাকি ছিল যাদের মধ্যে গতকাল আমরা ২০ জনকে তুলে দিয়েছি আর বাকি ২৪ জনকে আমরা ঈদের পর যোগাযোগ করলে পর্যায়ক্রমে তাদের তুলে দিব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌস মহল বলেন, ‘হলগুলোতে বিভিন্ন মহলের প্রভাবে অনেক শিক্ষার্থী অবৈধভাবে অবস্থান করছে। ফলে হলের বৈধ শিক্ষার্থীরা সিট না পেয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে।’ হলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এমন অভিযান চলমান থাকবে বলে আশাব্যাক্ত করেন তিনি।

বিকেলে হলটিতে অভিযান চালানোর কথা থাকলেও অভিযান শুরু করতে কেন রাত হলো এমন প্রশ্নের জবাবে
সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌস মহল বিভাগীয় সেমিনারে থাকায় তিনি আসার পর অভিযান শুরু করতে বলেন। সে কারণে অভিযান শুরু করতে দেরি হয়।

ছাত্রলীগের অভিযোগ, তিনি রাজনৈতিক আইডিওলজি থেকে তাদেরকে সিটগুলো দিয়েছেন। কিন্তু তাদের অভিযোগকে মিথ্যে ও বানোয়াট বলে আখ্যা দিয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘যখন তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হচ্ছে না তখন আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা ৬৬টি সিটের বিষয়ে একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছিলাম। কমিটি আবাসিক শিক্ষকদের মাধ্যমে করা হয়েছিল, তারাই ভাইবা নিয়েছেন এবং আমাকে তালিকা জমা দিয়েছেন সেটা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ।

তিনি আরো বলেন, ‘এখানে বিএনপি-জামাত বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল বলে কোন ব্যাপার নেই। এখানে কোন সংগঠনের না বরং যারা অবৈধভাবে অবস্থান করছিল শুধু তাদেরই বের করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ জুন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে অবৈধ শিক্ষার্থীদেরকে হল ত্যাগ করতে বলেন। তারা হল ত্যাগ না করলে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাদেরকে বের করার সিদ্ধান্ত নেয়।

জুলাই ০২,২০২২ at ১৭:২০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আআ/রারি